Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

Rangpurখোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৫ জুন ২০১৬: রংপুর : রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক এক বাসচালক ও তার সহকারীকে পিটিয়ে আহত করার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে রংপুরে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলা মটরশ্রমিক ইউনিয়ন।
মটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ অভিযোগ করে বলেন, গত মঙ্গলবার অনুমানিক বেলা দেড়টার দিকে নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকায় যানজটে পড়েন রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক। তার সামনে থাকা দিনাজপুরগামী মিলকি পরিবহনের চালক ভোলা মিয়া, সহকারী মুকুল ও সুপারভাইজারকে কনস্টেবলের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে চড়থাপর ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ওই রাতে নগরীর কামারপাড়া বাসষ্ট্যান্ড সমিতির কার্যালয়ে মটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি তাজুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে এক জরুরী কার্যকরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ অভিযোগ করেন ২০১৫ সালে বিএনপি জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে শ্রমিকরা জীবনবাজি রেখে মহাসড়কে যান চলাচল অব্যাহত রেখে ওই কর্মসূচি ভন্ডুল করে দেয়। ওই কর্মসূচি চলাকালে পেট্রোল বোমার আঘাতে ৩০ শ্রমিক মারা যান। শ্রমিকদের উপর সকল প্রকার জুলুম-নির্যাতন বন্ধে এই সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমরা আশা করি। কিন্তু রংপুরের পুলিশ প্রশাসন সামান্য অজুহাতে শ্রমিকদের উপর জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশ সুপার জেলার একজন কর্ণধার, তিনি এভাবে শ্রমিককে নির্যাতন করতে পারেন না। এর আগে রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কাউনিয়া জেলা শাখার সভাপতি আবুল কালামকে কাউনিয়া থানার পুলিশ কোন কারণ ছাড়াই সারারাত আটকে রাখে। পরে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জিলানীকে জানালে তিনি ভোররাতে আবুল কালামকে ছেড়ে দেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, পীরগঞ্জ উপজেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে একটি মারামারি মামলায় গ্রেফতার করে ভেন্ডাবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শাহীন। পরে তাকে কৌশলে হত্যা মামলাসহ আরো কয়েকটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এসব কারণে আমরা শ্রমিকরা আতংকিত ও উৎকন্ঠিত। আমাদের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই।
আব্দুল মজিদ অভিযোগ করে বলেন, পুলিশ প্রশাসন বরাবরই শ্রমিকদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে আসছে।
এসব ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বুধবার সন্ধ্যা থেকে রংপুর জেলার সকল প্রকার পরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।
কার্যকরি কমিটির ওই জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আনারুল ইসলাম রাজা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু, রোনাচুরজ্জামান মিন্টু সহ বিভিন্ন উপজেলার শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরের পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি চালক ভোলা ও তার সহকারীর গালে চড়-থাপর দিয়ে বোঝানো হয়েছে এলোপাতারিভাবে গাড়ি না রাখার জন্য।
তিনি আরো জানান, মেডিকেল মোড় একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এই মেডিকেলে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার মানুষ চিকিৎসার জন্য আসনে। কিন্তু শ্রমিকরা এখানে এলোপাতারিভাবে যানবাহন রেখে যাত্রী ওঠানামা করে। এতে করে মুমূর্ষরোগী পরিবহনের এ্যাম্বুলেন্স যানজটের কবলে পড়ে তাদের সময় অপচয় হয়। কখনো কখনো মুমূর্ষ রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। এব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বারবার বলা সত্বেও তারা তা আমলে নেয়নি।