Sat. Jun 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

15kখোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০১৬: জাসদ ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে জড়িয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিব্রত হয়েছেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন একজন সিনিয়র মন্ত্রী ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর প্রভাবশালী সদস্যসহ কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা।
তাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, জাসদকে জড়িয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যের বিষয় নিয়ে আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করেছেন। অবশ্য এ নিয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনো কথা হয়নি। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকের পরিবেশ অন্য রকম ছিল বলে বোর্ডের চারজন সদস্য জানিয়েছেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ বৈঠকে উপস্থিত থাকলেও তার কাছে কিছুই জানতে চাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে বৈঠকের আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ মুহূর্তে এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়েছে কি-না জানতে চান। এ সময় উপস্থিত নেতাদের অনেকেই তার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রথম সরকারে জাসদ নেতা আ স ম আবদুর রব মন্ত্রী ছিলেন। এখন মন্ত্রিসভায় আছেন হাসানুল হক ইনু। তাই বক্তব্য দেওয়ার আগে ভাবতে হবেথ কে, কখন, কোথায়, কী বক্তব্য দিচ্ছেন।
এর জবাবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী ছাত্রলীগের ইতিহাস নিয়ে বর্তমান নেতাদের অনেকের মধ্যে ধারণাগত ভ্রান্তি রয়েছে বলেই তিনি জাসদ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি ইতিহাসের সত্যটাই বলেছেন। এ সময় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম; শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কাজী জাফর উল্লাহ ও রাশিদুল আলম।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দলের নেতাদের জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে ঐক্যের প্রয়োজনে জাসদ নেতা আ স ম আবদুর রব এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। এখন জঙ্গি তৎপরতা ও গুপ্তহত্যার প্রেক্ষাপটে আরও ঐক্য জরুরি। এ অবস্থায় ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে মন্তব্য করার আগে সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়।
এক পর্যায়ে দলের নেতাদের কাছে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এমন বক্তব্যের কারণ জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। তিনি এক পর্যায়ে কৌতুক করে বলেন, মাহবুবউল আলম হানিফের পরামর্শেই জাসদ ও হাসানুল হক ইনুকে জড়িয়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বক্তব্য দিয়েছেন কি-না।
এর আগে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ জাসদের সমালোচনা করেছিলেন। তখনও বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার তাগিদ থাকলেও এ জোটের শরিক দল এবং শীর্ষ নেতাকে জড়িয়ে বক্তব্য দেওয়ায় কিছুটা হলেও বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
এ রকম নানামুখী আলোচনার মধ্যে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গতকাল লন্ডন সফরে গেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের থাকা না থাকা নিয়ে আগামী ২৩ জুন অনুষ্ঠেয় গণভোট পর্যবেক্ষণ করবেন তিনি। এ ছাড়াও আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে দক্ষিণ এশিয়া ডায়াসপোরা সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। আগামী ২৭ জুন তার দেশে ফেরার কথা।