খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০১৬: কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও
: আজ বৃহস্পতিবার মির্জা রুহুল আমিনের ২০তম মৃত্যু বার্ষিকী। এই উপলক্ষে মির্জা রুহুল আমিন সৃতি পরিষদের উদ্দোগে বিভিন্ন কর্মসূমি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচি সকাল ১০টা হতে মরহুমের বাস ভবনে ও সেনুয়া গোরস্থান মসজিদে কোরআন খানী, ২.৫০মিনিটে কবর জিয়ারত, এছাড়াও বিকাল ৫.৩০মিনিটে শহরের জে,আর সেন্টারে আলোচনা সহ সম্মাননা পুরুষ্কার ও সনদ প্রদান, ৬টায় মরহুমের স্বরণে দোয়া মাহাফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
মির্জা রুহুল আমিনের সংক্ষিপ্ত জীবনি…
ব্রিটিশ আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৮৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মৎস ও পশু সম্পদ মন্ত্রীর দায়ীত্ব পাওয়া সব টুকু ছিল এক বর্নাঢ্য রাজনীতি জীবনের ধারক মানুষটি। তিনি অনুভব করেছিলেন রাজনীতিবিদদের কাজ শুধু বক্তৃতার মঞ্চে উঠে কথায় মালা সাজানো নয় বরং সমাজ সংস্কার করে মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়াই এক জন রাজনীতিবীদের মুল দায়ীত্ব বলে তিনি মনে করতেন। তাইতো তিনি সমাজ সেবাকেই ব্রত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন । প্রান্তিক মানুষের সেবার মাধ্যমে দ্রুত পৌছে গিয়েছিলেন মানুষের হৃদয়ের মনি কোঠায়। উত্তরের প্রান্ত শহর ঠাকুরগাওয়ের অতিপরিচিত শ্রদ্ধার সাথে উদারিত মানুষটির নাম মির্জা রুহুল আমিন। ১৯২১সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী পঞ্চগড় জেলার বর্তমান আটোয়ারী থানার অন্তরগত মির্জাপুর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী এবং সম্ভ্রান্ত মির্জা পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে কলকাতা বিশ্ব বিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। সে সময়ে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় ছাত্রনেতা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। পারিবারিক ঐতিহ্য এবং উচ্চ শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে রাজনীতিতেও তিনি নিজেস্ব মেধা মননের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর সুযোগ পান। ১৯৬২ ও ১৯৬৩ সালের পর পর দুবার তিনি পূর্ব পাকিস্থানের প্রাদেশিক আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালেই তদানিন্তন প্রাদেশিক পরিষদে যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মানের দাবিতে অত্যন্ত জোরালো বক্তব্য রাখেন। তার বক্তব্য সে সময়ে রাজনীতিতে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে । তার দূরদর্শী রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার আর এক ফসল ঠাকুরগাওয়ের উত্তর বাংলাদেশ গভীর নলকুপ প্রকল্পের প্রতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। মির্জা রুহুল আমিন সমাজ সেবায় ছিলেন অন্তপ্রধান তিনি একাধারে দির্ঘ ১৭ বছর ঠাকুরগাও পৌরসভায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়ীত্ব পালন করেন। এক জন ব্যাক্তি কতটা জনপ্রিয় হলে এটা সম্ভব সেটা সহজেই অনুমেয়। মির্জা রুহুল আমিন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের ছিলেন একজন উজ্জল তারকা। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ ও ১৯৮৮ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ সরকার এর মৎস ও পশু সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঠাকুরগাওয়ের মানুষের সাথে ছিল তার নাড়ির সম্পর্ক এ অঞ্চলের সাধারন মানুষের ভাগ্যো উন্নোয়নের লক্ষে এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়ন প্রচেস্টার প্রতিটি স্তরেই রয়েছে তার সু-পরামর্শ নেতৃত্ব। ঠাকুরগাঁওকে একটি আধুনিক জনপদে পরিণত করতে এবং কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে গড়ে তোলেন বিদু্যুৎ কেন্দ্র। গভীর লকুপ প্রকল্প হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ। বিশেষ নারী শিক্ষার বিস্তার ও প্রসারে তার রয়েছে বিশেষ ভ’মিকা। তিনি ঠাকুরগাও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ঠাকুরগাও সরকারী মহিলা কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা। মির্জা রুহুল আমিন ছিলেন ঠাকুরগাও তথা উত্তর বঙ্গের একজন কৃতি পুরুষ। সততা একগ্রতা একনিষ্ঠতা ছিল তার জীবনের সাফল্যের মুলমন্ত্র। সফল এবং বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ঠাকুরগায়ের উন্নয়নের স্বপ্ন দ্রষ্টা মির্জা রুহুল আমিনের আজ ২০ তম মৃত্যু বার্ষিকী। একই দিনে গভীর কৃতঙ্গতা আর শ্রদ্ধায় স্বরন করি সু-মহান নেতা মির্জা রুহুল আমিন সহ অত্র কমিটির সাবেক সভাপতি মরহুম ফজলুল করিম ও সাধারন সম্পাদক মরহুম এ্যাডঃ তৌহিদুল ইসলাম, তৎসঙ্গে অত্র কমিটির সদস্য আব্দুল গাফ্ফার এর আত্মার মাগফেরাতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করি।