খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২২ জুন ২০১৬: রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধ মন্দিরের পাশের খাল থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র-গুলি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ব্যবহার করে থাকেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘অশুভ উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রীয় প্রশ্রয়ে এ বিপুলসংখ্যক অস্ত্র-গুলি খালে ফেলা হয়েছিল বলে জনগণ বিশ্বাস করে। সন্দেহমূলক জঙ্গি গ্রেফতার, রিমান্ডে নিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা ও খাল থেকে অস্ত্র উদ্ধার একই সূত্রে গাঁথা একটি মহাপরিকল্পনার অংশ।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার (২২ জুন) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলো মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই ব্যবহার করে থাকে। এখন মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতা ছাড়া তুরাগ নদীর খালে এ অস্ত্র গেল কীভাবে। এলাকাটি তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে আবদ্ধ।’
রিজভী বলেন, ‘জঙ্গি দমনের নামে গণগ্রেফতারের পাশাপাশি ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ডের হিড়িক পড়েছে। আইন ও জনমতের তোয়াক্কা না করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকেরা মানুষ হত্যার নেশায় বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংঘটিত এ সমস্ত হত্যাকাণ্ডকে বন্দুকযুদ্ধ বলে চালানো হচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধের নামে এ সব হত্যাকাণ্ডে জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র সন্দেহ, রহস্য ভেদ করে সরকারের ষড়যন্ত্র ও কুবুদ্ধি প্রকাশ হয়ে পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জঙ্গি হোক, কিংবা অন্যকোনো অপরাধী হোক তারা সরকারের জিম্মায় খুন হয় কীভাবে? এতে প্রতীয়মান পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে সত্যকে চেপে রেখে ন্যায়কে কবর দেওয়া হচ্ছে। প্রকৃত অপরাধীকে আঁড়াল করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে সহায়তা করা।’
‘সরকার কোনো গভীর সত্যকে লুকাতে চেষ্টা করছে, গণতন্ত্রের জন্য কেউ যাতে আওয়াজ তুলতে না পারে সে জন্য শেখ হাসিনা নিজেই জঙ্গি সৃষ্টি করে সেই জঙ্গির বিরুদ্ধে যুদ্ধের খেলা খেলতে গিয়ে অভিনব রণকৌশল আবিষ্কার করেছেন। জঙ্গিদের দিয়ে খুনোখুনি করিয়ে দেশে একটি সাজানো অস্থিতিশীলতা বজায় রাখতে চাচ্ছেন, যাতে তার মকমলের গদির দিকে গণতান্ত্রিক শক্তি ধেয়ে না আসতে পারে’, যোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘সর্বদিক থেকে ব্যর্থ জনসমর্থনহীন এ সরকার তাদের ব্যর্থতা আঁড়াল করতে গিয়েই নিপীড়ন আর রক্তপাতকেই নিজেদের সিংহাসন টিকিয়ে রাখার গ্যারান্টি মনে করছে। আর সে জন্য এ দেশে এখন কোথাও জীবনের কোলাহল নেই, চারদিকে শুধু কুলখানি, চল্লিশা আর শ্রাদ্ধ্যের অনুষ্ঠান।’
ঢাকা পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যকে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি বলেও মনে করেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ শামসুল আলম তোফা প্রমুখ।