Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

15খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০১৬: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেছিলেন সংগঠনের জন্য। অনেকে মন্ত্রিত্বের জন্য সককিছু ত্যাগ করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ছিলেন তার ব্যতিক্রম। তিনি সংগঠনের জন্য জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সব কিছু ত্যাগ করেছে। এটি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের শিখতে হবে। তাদেরকে এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি এ সব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কোনোদিন সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করেনি। তারা সবসময় ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা তারা পুঙ্খানুঙ্খভাবে পালন করেছেন। কিন্তু নেতারাই দল ছেড়ে চলে গেছে। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কিন্তু তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এসব করেনি। তারা দলের জন্য সবকিছু করতে বদ্ধ পরিকর।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নেতাকর্মীদের দেশের জন্য ত্যাগ করতে শিখতে হবে। ভোগের কথো চিন্তা করলে দেশকে কিছুই দেওয়া যাবে না। এ উদাহরণ হচ্ছে ৭৫’ এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা ত্যাগের কথা চিন্তা না করে ভোগের কথা চিন্তা করেছিল। এজন্য দেশের কোনো উন্নয়ন হয়নি।
ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করলে দেশকে কিছু দেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
এছাড়া দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সংগঠনের প্রাণভোমরা অভিহিত করেছেন তিনি।
নেতাকর্মীদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আমি এই আহবান জানাব- একজন রাজনৈতিক নেতা যদি সততার সাথে কাজ করতে পারে, তবে সেই সততাই হচ্ছে সবচেয়ে বড়ো শক্তি। যে শক্তি দিয়ে যেকোনো দুর্যোগ বা দুর্বিপাক মোকাবেলা করা যায়।’
শত ষড়যন্ত্র-নির্যাতনেও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে না পরার কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগের শেকড় অত্যন্ত গভীরে প্রোথিত বলে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যে তৃণমূলের নেতাকর্মী, এই নেতাকর্মীরাই সবসময় যেকোন ক্রান্তিকালে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওপরের নেতারা কখনো কখনো ভুল করেছেন। কিন্তু, তৃণমূলের নেতারা কখনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল করেন নাই। যে নির্দেশনা জাতির পিতা দিয়েছেন, সেই নিদের্শনা সঠিকভাবে মেনেই কিন্তু এই সংগঠন এগিয়ে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘যতবার আঘাত এসেছে যতবার এই দলভাঙ্গার চেষ্টা করা হয়েছে ততবরাই এই দল আরও উজ্জ্বল হয়ে জনগণের সামনে আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছে এবং আরও শক্তিশালী হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলটির প্রতি আঘাত একবার আসেনি, বার বার এসেছে। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিই যখন পার্টি ভেঙে চলে যায়, তখন সে পার্টি টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়। সে সময় বঙ্গবন্ধুর মতো ত্যাগী স্বাধীনচেতা এতো বলিষ্ঠ নেতা এই পার্টিতে ছিলেন বলেই এই দল যেমন টিকে গেছে, তেমনি শক্তিশালীও হয়েছে।
আজও বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শ ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আঘাত আমাদের ওপর বার বার এসেছে। প্রতিঘাতে সে আঘাত ফেরত দিয়ে আমরা বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে যারা রাজনীতি করেন, তারা হয়তো নিজেদের জন্য অনেক কিছু করতে পারেন, কিন্তু দেশকে কখনও কিছু দিতে পারেন না। আমাদের একটাই লক্ষ্য, জনগণের কল্যাণ। আওয়ামী লীগ সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। সেভাবেই আগামীতে কাজ করে যাবে।’
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও অধ্যাপক ড. অনুপম সেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগর প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-দফতর সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।