খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৪ জুন ২০১৬: আর কয়েকদিন পর ঈদুল ফিতরের ঈদ। ঈদ উপলক্ষে নতুন পোশাক তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর দর্জি পাড়ার কারিগররা। এবার ঈদে পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি। তবে মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে লেহাঙ্গার চাহিদাও রয়েছে বেশ। ঈদের আনন্দকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিতে ছোট, বড় নতুন সবারই নতুন পোশাক চাই। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সেলাই মেশিনের খরর খরর শব্দ করে চলছে দর্জি পাড়ায় ব্যস্ততা। যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের। পছন্দের কাপড়ে বাহারি ডিজাইনে গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে আধুনিক পোশাকের সাথে তাল মিলিয়ে পোশাক তৈরিতে মেতেছেন দর্জিরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, দর্জি পাড়ায় সানমুন টেইলার্স ১১জন কারিগর আছে। এদের মধ্যে কেউ কাপড়ের মাপ নিচ্ছেন, কেউ কাপড় কাটছেন, কেউবা কাপড়ের মাপে সেলাই করছেন। আবার কেউ কাপড়ে ভাঁজ দিয়ে আয়রন করছেন। সবাই যে যার মতো মনযোগ দিয়ে কাজ করেছেন। যেন কথা বলার সময় নেই। আবু সাঈদ জেলার বদলগাছী উপজেলার কোলা গ্রাম থেকে পাঞ্জাবির অর্ডার দিতে এসেছেন।
তিনি বলেন, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। দোকানদার পরিচিত ছিল ফোন করে জানিয়েছি পাঞ্জাবি তৈরী করতে হবে। প্রতি ঈদে নিজের পছন্দমতো কাপড় কিনে দর্জির কাছে বানাতে দেই। শার্টের কারিগর বিপ্লব হোসেন জানান, প্রতি ঈদে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। সকাল থেকেই গভীর রাত পর্যন্ত চলে কাজ।
ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ৬শ’ টাকা পর্যন্ত কাজ করা যায়। রোযার ২৭ তারিখ পর্যন্ত এ ব্যস্ত থাকতে হয়। কাজ শেষে যা আয় হবে তা থেকে নিজের ও পরিবারের জন্য নতুন পোশাক ও ঈদের কেনাকটা করা হবে। প্যান্টের কারিগর বিজয় খন্দকার জানান, শার্টের তুলনায় প্যান্টের পরিশ্রম একটু বেশি। এ মৌসুমে দিনে প্রায় ৭০০/৮০০ টাকার পর্যন্ত কাজ করা যায়।
এছাড়া সাদ্দাম হোসেন, বেদারুল ইসলাম, রাহিম হোসেন চাঁদ উঠা পর্যন্ত তাদের এ ব্যস্ততা থাকলে বলে জানান। মামুনি লেডিস টেইলার্স এর সত্ত্বাধিকারী হেলাল হোসেন জানান, গতবারের তুলনায় এবার ক্রেতাদের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রোযার শুরু থেকেই ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। এবার মেয়েদের লেহাঙ্গার চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
এছাড়া বিভিন্ন ধরনের থ্রী পিচ ও বোরকা অর্ডার দিচ্ছেন। লেহাঙ্গা ৪শ টাকা, থ্রী পিচ ২২০ টাকা এবং বোরকা ২৫০ টাকায় অর্ডার নেয়া হচ্ছে। রোজার ২৭টা পর্যন্ত অর্ডার নেয়া হবে। আল মক্কা টেইলার্স এর সত্ত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলাম জানান, শবে বরাত থেকে পাঞ্জাবির অর্ডার আসতে শুরু হয়েছে। এখন আপাতত নতুন অর্ডার নেয়া বন্ধ আছে। তবে অনেক পরিচিত যারা আছেন তারা মোবাইলে আগে থেকেই বলে রাখেন। তাদেরকে না করা যায় না। ঈদ মৌসুমে পাঞ্জাবির অর্ডার প্রায় ১ হাজার ছাড়িয়ে যায়। সাধারন পাঞ্জাবি ৩০০/৩৫০ টাকা এবং পুরো সেট ৫০০/৫৫০ টাকা।
এছাড়া পাঞ্জাবির মডেল হলে একটু বেশি টাকা নিতে হয়। সানমুন টেইলার্সের প্রোপাইটর এসএম মজিদ জানান, এবার অর্ডার একটু কম আসছে। গত বছর ২২ রোযা পর্যন্ত অর্ডার নেয়া হয়েছিল। তবে এবার ২৭/২৮ রোযা পর্যন্ত চলবে। ধানের দাম কম হওয়ায় এ অবস্থা হচ্ছে। শার্টের ২০০টাকা এবং প্যান্ট ২৮০ টাকা পর্যন্ত অর্ডার নেয়া হচ্ছে।