Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

natoreখোলা বাজার২৪,শনিবার, ২৫ জুন ২০১৬: তাপস কুমার, নাটোর: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ একরামুল আলমের মৃত্যুর প্রায় ছয় মাস পর নানাবিধ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুধুমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্থিক ক্ষমতা পালনের দায়িত্বভার পেলেন ভাইস চেয়ারম্যান (প্যানেল -১) ও জামায়েত ইসলামীর নেতা মো. আব্দুল হাকিম। তবে এই দায়িত্ব ভার পাওয়ার পর থেকে বড়াইগ্রামের সর্বত্র শুরু হয়েছে নানা রকম বিতর্ক। অফিস পাড়া, চায়ের দোকান থেকে শুরু হয়ে ফেসবুকে এই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জামায়েত ইসলামীর উপজেলার সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা কমিটির সদস্য এই নেতাকে কেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান করা হলো তার জন্য দোষারোপ করা হচ্ছে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসকে। তবে ১৪ জুন তারিখের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব ড. জুলিয়া মঈন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, মো. আব্দুল হাকিমকে উপজেলা চেয়ারম্যানের আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথা কোথাও উল্লেখ নাই।
উল্লেখ্য, গত বছর ২৭ ডিসেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য ও বনপাড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. একরামুল আলম (৬৫) হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যবরণ করার পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ২ ফেব্রুয়ারী তার পদটি শূণ্য ঘোষণা করেন। আইন অনুযায়ী শূণ্যপদ ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে উপ-নির্বাচন দেয়ার কথা থাকলেও উপজেলা পরিষদের সংশোধনী গেজেট প্রকাশ না হওয়ায় তা বিলম্ব হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন জানান, গেজেট প্রকাশের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমি এ ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই উপ-নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব হবে।
এদিকে উপজেলা পরিষদের দুই সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য মোছা. সালমা বেগম ও মোছা. আসমা বেগম স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে অংশ নিতে তাদের স্বীয় পদ থেকে অব্যহতি দিলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ২৫ মে এক প্রজ্ঞাপনে দুই আসনে শূণ্য পদ ঘোষণা করেন। এক্ষেত্রে সেখানেও তিনটির মধ্যে দুইটি আসনই শূণ্য। ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাকিম জানান, উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর পর থেকে উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা খরচ করার কোন সুযোগ ছিলো না। দীর্ঘ ৬ মাস যাবত উপজেলা পরিষদের কেহ-ই বেতন-ভাতা উঠাতে পারেননি। একরকম স্থবির হয়ে পড়েছিলো উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম তথা উপজেলার উন্নয়ন। তবে, এই আর্থিক ক্ষমতা প্রদানের কারণে বরাদ্দকৃত টাকা উন্নয়নখাতে খরচের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস জানান, উপজেলা পরিষদের ক্ষমতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়ার জন্য অনেক দৌড়-ঝাঁপ করা হলেও সরকারের আইনের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। যার ফলে আইন অনুযায়ী প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব পেয়েছেন। এক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ (মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) বিএনপি সমর্থিত। এ ব্যাপারে দেশের আইন যা করেছে তা মেনে নেয়া সকল নাগরিকের কর্তব্য। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে উপজেলায় ৭৯ লক্ষ টাকার কাজ চলছে। এ মুহুর্তে এই আর্থিক ক্ষমতা না দিলে টাকাগুলো ফেরত চলে যেতো। অতএব এই নিয়ে বিতর্ক সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।