খোলা বাজার২৪,শনিবার, ২৫ জুন ২০১৬: কামরুল হাসান, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় এক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে অজবালা নামে এক মহিলার উপর দিনদুপুরে মাথা ন্যাড়া করে চুল জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নির্যাতন ও অপহরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুরুতে পুলিশ মামলা নিতে টালবাহানা করলেও ঘটনার ১৪ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি সেই নির্যাতিত অজবালাকে। মামলা তুলে নেওয়াসহ প্রাননাশের হুমকীতে আতংকিত নির্তাতিত অজবালার পরিবার। তবে, পুলিশ বলছে অজবালাকে উদ্ধারে সচেষ্ট প্রশাসন দোষিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রকাশ্যে দলিত সম্প্রদায়ের (হিন্দু ধর্মালম্বী) অজবালার পা ভেঙ্গে রক্তাক্ত করে মাটিতে ফেলে দেয় সাবেক স্বামী খবির। এর পর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দিয়ে চুল জ্বালিয়ে দেয় অজবালার। জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে, এর পর থেকে নিখোঁজ হয় অজবালা। আর এ নির্যাতনের অভিযোগ রানীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের বসতপুর গ্রামের প্রভাবশালী পরিবার কালু হাজীর ছেলে খবিরের বিরুদ্ধে। ওই পরিবারের ভয়ে এলাকার শতশত মানুষ শুধু দর্শকের ভুমিকা পালন করেছে। শুধু তাই নয়, সংবাদকর্মীর সামনে মুখখুলতেও ভয় পায় এলাকাবাসী। কিন্তু কেন এ নির্যাতন তা থেকে যায় অন্ধকারে। ঘটনার দুই দিন পর ১২ জুন থানায় অভিযোগ দেয় অজবালার মা ওলেবালা। কিন্তু প্রভাবশালী একটি পক্ষ ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে। অবশেষে গত ১৫ জুন খবিরসহ ৪ জনকে আসামী করে রানীশংকৈল থানায় নির্যাতন ও অপহরন মামলা হয়। পর দিন খবিবুরের ভাই আমিনুলকে আটক করে পুলিশ। এর পর থেকে প্রভাবশালী খবিবুরের পরিবার নির্যাতিত ওই পরিবারকে মামলা তুলে নেওয়াসহ প্রাণনাশের হুমকীও দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। অজবালার মেয়ে গীতা রানী ও জামাই ফুল কুমার অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার ১৪ দিনেও মা কে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য খবিরের পরিবার হুমকী দিচ্ছে। ঘটনার ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আজও উদ্ধার করতে পারেনি নির্যাতিত সেই অজবালাকে। রানীশংকৈল থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। এখন পর্যন্ত অজবালাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলাটি গুরুত্বের সাথে নিয়ে তদন্ত করছে জানিয়ে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। খবিরের ভাই আমিনুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মালম্বী টুনকু রায়ের সাথে দুই বছর আগে বিয়ে বিচ্ছেদ হয় অজবালার। ধর্মপরিবর্তন করে মুসলমান হয়ে কালু হাজীর ছেলে খবিবুরের সাথে বিয়ে হয় অজবালার। খবিবুর ৮মাস ঘর সংসার করে অজবালাকে তালাক দেয়। পরে সে হিন্দুধর্ম গ্রহন করে আবার পরিবারে ফিরে যায় অজবালা। এই ব্যপারে আমাদের প্রতিনিধির সাথে মুঠো ফোনে কথা হয় রানীশংকৈল উপজেলার চেয়ারম্যান আলমগীর সরকারের সঙ্গে। তিনি জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। কাজটি নিসন্ধেহে অমানবিক। এই ঘটনায় যারা জরিত তাদের প্রত্যেককেই শাস্তি পাওয়া দরকার।