Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৬ জুন ২০১৬: জাহাঙ্গীর আলম, কুড়িগ্রাম : ঈদকে সামনে রেখে মাদক ব্যবসায়ীরা ব্যাপক হারে মজুদ করছে গাঁজা, মদ, ফেন্সিডিল, ইয়াবা নামক মরণ নেশা জাতীয় দ্রব্য। এ নিয়ে সচেতন মহলের মধ্যে জাগে নানা কৌতুহল। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী থানার পুলিশের বিশেষ অভিযান থেকে বাদ পড়া চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যার ফলে পবিত্র রমজান মাসেও থেমে নেই তাদের মাদকের রমরমা ব্যবসা। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় দিয়ে দিনে রাতে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চললেও থানা পুলিশ প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে পারছে না। বর্তমান সরকার যখন সারা দেশে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস মাদক ব্যবসায়ীসহ নানা ধরনের অপরাধমুলক কর্মকান্ডের সাঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের ভিত্তিতে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ পহেলা জুন থেকে গত রোববার পর্যন্ত গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত ১৮০ জন আসামীদেরকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করলেও বড় বড় মাদক ব্যবসার রাঘব বোয়ালরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। তবে পুলিশ তাদের কেন গ্রেফতার করছে না এ নিয়ে সচেতন মহলে এই বিষয়টি সুষ্পষ্ট নয়। তাদের মতে বিশেষ অভিযানে ছোটখাট কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে সামান্য কিছু গাঁজা, মদ, ফেন্সিডিল, ইয়াবা, প্যাথডিন উদ্ধার করেছে। শুধু হাতে গোনা কয়েকজন গাঁজা ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের গ্রেফতার করে দায় সারছে থানা পুলিশ। উপজেলা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ী এবং তাদের ব্যবসার ধরনের অনেক তথ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। ওই সব চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা গ্রেফতার না হওয়ার পিছনে রয়েছে অশুভ শক্তি। সে কারণে পুলিশ প্রশাসন তাদের গ্রেফতার না করে চুপসে যায়। বর্তমানে মাদকের ভয়াল গ্রাসে জর্জরীত হয়ে গেছে সীমান্ত এলাকা। চোরাকারবারীরা উপজেলার প্রায় ৫০টি রুট দিয়ে তাদের ইচ্ছা মত মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক বিক্রির ও পাঁচারের প্রধান প্রধান রুট গুলো হলো- গোরকমন্ডল, চর-গোরক মন্ডল, বস্তি গোরকমন্ডল, বালারহাট বাজারের চারিদিক, গজেরকুটি, খলিশাকোটাল, বালাতারী, কৃষ্ণানন্দ বকসী, ধুলারকুটি, চওড়াবাড়ী, পূর্ব ফুলমতি, শিমুলবাড়ী জুম্মারপাড়, নাখারজান, গংগারহাট, ধর্মপুর, অনন্তপুর, উত্তরঅনন্তপুর, কাশিয়াবাড়ী, বিদ্যাবাগীশ, ঠোসবিদ্যাবাগীশ, চাঁদেরবাজার, ধারিয়ারপাঠ, বেড়াকুটিবাজার, গোড়কমন্ডল আবাসন, ফুলসাগর আবাসান, পশ্চিশ ধনিরাম আবাসন পাশের রাস্তা। এ সব স্থানের গাঁজা, মদ, ফেন্সিডিল ও নেশা জাতীয় ভারতীয় ট্যাবলেট ইয়াবা’র ব্যবসা চালিয়ে আসছে। যেন দেখার কেউ নেই । যার ফলে ওই এলাকার স্কুল, কলেজ পড়–য়া যুবসমাজ আজ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অনেকেই নেশার টাকা সংগ্রহ করতে না পেরে চুরি ছিনতাইসহ নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছেন। এমন কি তারা পবিত্র রমজান মাসেও এলাকায় ব্যাপকহারে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা ঈদকে সামনে রেখে ব্যাপক হারে মদ, গাঁজা ফেনসিডিল, ইয়াবা মজুত করছে। বেশির ভাগই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা দুলাল জানান, আইন শৃখলা বাহিনী আন্তরিক হলে মাদক নিরর্মূল করা কিছুটা হলেও সম্ভব।
এব্যাপারে আশি ও নব্বই দশকের সাবেক ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী পোদ্দার রতন বলেন, এ এলাকার যুব সমাজ ধীরে ধীরে মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন । তাই আমাদের সকলকে মাদক বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
এ ব্যাপারে শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এজাহার আলী জানান, মাদক কিছুটা হলেও নির্মূল করা দরকার তা না হলে যুব সমাজ একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনর্চাজ(ওসি)এ বি এম রেজাউল ইসলাম জানান, মাদকের উপর আমরা খুবই তৎপর। সব সময় আমার পুলিশ সাদা পোশাকে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করছেন। রমজান মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মাদক মামলা হয়েছে পাঁচটি একটি বিশেষ আইনে। গাঁজা ৩০ কেজি ফেনন্সিডিলের বিকল্প চুপসি ৪১ বোতল উদ্ধার করেছি।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম৪৫ বিজিবি শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের সুবেদার দ্বীনেশ চন্দ্র জানান, বিজিবি সব সময় মাদকের উপর বিশেষ টহল রাখছেন।