খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৬ জুন ২০১৬: তাপস কুমার, নাটোর: রমজানে চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রাকে করে খোলা বাজারে চিনি বিক্রি শুরু করেছে নাটোর সুগার মিলস। খুচরা বাজারের চেয়ে কেজি দরে ৭থেকে ৮টাকা কম পাওয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ভোক্তাদের মাঝে। তবে খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশনের প্রতিদিন দুই টন চিনি বিক্রির সিদ্ধান্ত থাকায় চাহিদার তুলনায় চিনি সরবরাহ করতে পারছেনা সুগার মিলস কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, রমজানে নিত্যপণ্যের বাজারের সাথে চিনির চাহিদাও বেড়ে যায়। যার কারণে রমজানে যাতে চিনির দাম বৃদ্ধি না পায় সে জন্য চিনির বাজার স্থিতিশিল রাখতে বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশন ডিলার পর্যায়ে চিনি বিক্রি বন্ধ করে দেয়। পরে খোলা বাজারে ট্রাকে করে প্রতিদিন ২টন চিনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় কর্পোরেশন। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের ১৫টি চিনিকল ৫২টাকা কেজি দরে রমজানের প্রথম দিন থেকে খোলা বাজারে চিনি বিক্রি শুরু করে।
নাটোর সুগার মিলস সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ মৌসুমে নাটোর সুগার মিলে বর্তমানে ৬হাজার ৭৫০মেট্রিক টন চিনি মজুদ রয়েছে। রমজানের শুরু থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ৪০মেট্রিক টন চিনি বিক্রি করেছে সুগার মিলসটি। বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প কর্পোরেশন এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিদিন ২ মেট্রিক চিনি নিয়ে খোলা ট্রাকে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে সুগার মিলস কর্তৃপক্ষ। খোলা বাজারে এই চিনি বিক্রি চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে শহরের স্টেশন বাজার, কেন্দ্রীয় মসজিদ মার্কেট, বনবেলঘড়িয়া বাইপাস,মাদ্রাসা মোড়, বাবুর পুকুর পাড় সহ বিভিন্ন স্থানে খোলা ট্রাকে চিনি বিক্রি করতে দেখা যায়। খুচরা বাজার থেকে ৭থেকে ৮টাকা কম হওয়ায় প্রতিদিন চিনি কনিতে ভীড় জমায় ভোক্তারা। আগ্রহ ভরেই কিনছে সবাই।
চিনি বিক্রি করতে আসা নাটোর সুগার মিলের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এনামুলক হক বলেন, রমজানের শুরুতে সুগার মিল ৫২টাকা কেজি দরে প্রতিদিন ২টন করে চিনি বিক্রি করছে। প্রতিদিন যার মূল্য দাড়ায় লাখ টাকার ওপরে। দেশীয় চিনি হওয়ায় এবং দাম ভোক্তাদের নাগালে থাকায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। তবে বরাদ্দকৃত ২টন চিনি দিয়ে ভোক্তাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ বাড়ানো হলে চাহিদা মেটানো সম্ভব।
চিনি কিনতে আসা বনবেলঘড়িয়া বাইপাস এলাকার হোমিও চিকিৎসক হাসিব হোসেন বলেন, অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে চিনির চাহিদা বেড়ে যায়। আর বাজারে দেশী চিনি ৫৭ থেকে ৫৮টাকা এবং সাদা চিনি ৬০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে খোলা বাজারে দেশি চিনি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫২টাকা কেজি। এতে ৭থেকে ৮টাকায় দেশি চিনি পাওয়া যাচ্ছে।
একই এলাকার অটো চালক সোহেল রানা বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে তার পরিবারের জন্য ৫কেজি চিনির প্রয়োজন। সহজেই রাস্তার পার্শ্বে কমদামে চিনি পাওয়ায় তার লাভই হয়েছে।
এব্যাপারে নাটোর সুগার মিলের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ বলেন, দেশীয় চিনির পরিচিত ঘটাতে এবং বাজার স্থিতিশীল রাখতে খোলা বাজারে ট্রাকে করে চিনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়াও পাওয়া গেছে। তবে বরাদ্দকৃত ২টন থেকে বাড়িয়ে ৩ থেকে ৪টন করা যায় কিনা সে ব্যাপারে কর্পোরেশনের সাথে আলোচনা করা হবে।