খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৭ জুন ২০১৬: ইউরোপীয় ইউনিয়নে ব্রিটেনের সদস্য পদ নিয়ে দ্বিতীয় একটি গণভোটের জন্যে এক আবেদনে ২৫ লাখেরও বেশি স্বাক্ষর জমা পড়েছে। খবর বিবিসির।
বৃহস্পতিবারের গণভোটে বেশিরভাগ মানুষ ইইউ ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দেয়ার পর লোকজন এই পিটিশনে সই করছেন।
এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। কারণ সাধারণত কোনো পিটিশনে এক লাখের বেশি স্বাক্ষর থাকলে পার্লামেন্টে সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
এদিকে গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে রায় আসার পর থেকেই উত্তাল যুক্তরাজ্য। ফলাফলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ মানুষ রাজধানী লন্ডন ও স্কটল্যান্ডের কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে।
লন্ডনের স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে স্বাক্ষর করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। তারা লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন।
আর স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে স্কটল্যান্ডের কয়েকটি শহরেও। যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হতে দ্বিতীয়বারের মতো গণভোটের ডাক দেয়ার কথা জানান স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জন।
বৃহস্পতিবারের গণভোটে ৫২ শতাংশ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে আর ৪৮ শতাংশ মানুষ থাকার পক্ষে রায় দেয়।
তবে লন্ডন, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেশিরভাগ ভোটার রায় দেয় ইইউতে থাকার পক্ষে।
ভোটের পর প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা করেছেন, আগামী অক্টোবর মাসে তিনি তার পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
এরপরই দ্বিতীয়বার গণভোটের দাবিতে পিটিশনের উদ্যোগ নেন উইলিয়াম অলিভার হিলে। তিনি বলছেন, ‘আমরা যারা এখানে সই করেছি, তারা সরকারের কাছে আবেদন করছি এমন একটি আইন করতে যে কোনো পক্ষে যদি ৬০ শতাংশের বেশি ভোট না পড়ে এবং মোট ভোট গ্রহণের হার যদি ৭৫ শতাংশের বেশি না হয়, তাহলে আরেকটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।’
কিন্তু বৃহস্পতিবারের গণভোটে মোট ভোট পড়েছে ৭২.২ শতাংশ, যা গতবারের সাধারণ নির্বাচনে পড়া ভোটর চেয়েও বেশি। তবে এটা অলিভার হিলে যে ৭৫ শতাংশ ভোটের কথা বলছেন তার চেয়ে কম।
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে ২০১৪ সালে যে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে ভোট পড়েছিল ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ।
তবে ১৯৯২ সালের পর থেকে কোনো সাধারণ নির্বাচনেই ৭৫ শতাংশের বেশি ভোপ পড়েনি।
হাউজ অফ কমন্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, পিটিশনে সই করার ব্যাপারে বহু মানুষের আগ্রহের কারণে সরকারি এই সাইটটি আপাতত ভেঙে পড়েছে।
মঙ্গলবার পিটিশন কমিটির জরুরি বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। আরেকটি আবেদনে লন্ডনের স্বাধীনতা ঘোষণার আহ্বান জানানো হয়েছে মেয়র সাদিক খানের প্রতি।
ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। ওদিকে শনিবার ইইউর প্রতিষ্ঠাকালীন ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকে ব্রিটেনকে ইইউ ছাড়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
বুধবার ইইউর বাকি ২৭ টি দেশের নেতারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জরুরি বৈঠকে বসবেন।
যুক্তরাজ্য থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে ইইউতে প্রবেশের ইচ্ছে জানিয়েছে স্কটল্যান্ড।
ব্রিটেনের পর এবার ফ্রান্সেও গণভোটের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির ডানপন্থী দল ‘ন্যাশনাল ফ্রন্ট’।