খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০১৬: নওগাঁ: নওগাঁ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেনীতে ভর্তি বানিজ্যের কারনে ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের সৃষ্ট দ্বন্দে পিয়ন লঞ্চিত ও অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির সিরিয়ালের অনিয়ম করে অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভর্তি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে ভর্তিযোগ্য শতাধিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, গত রবিবার সকাল থেকেই একাদশ শ্রেনীতে মেধাক্রম অনুযায়ী ভর্তি চলছিল। কিন্তু হঠাৎ বেলা ১২টার দিকে ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারী কয়েকজন এসে বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি ফরম হাতে ভর্তি কক্ষে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় দায়িত্বরত পিয়ন গুলবার রহমান বাধা দিলে ওই পিয়নকে এলোপাথাড়ী মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনার পর ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সব বিভাগে ভর্তি বন্ধ করে দেন অধ্যক্ষ। অপর দিকে ছাত্রলীগের মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে কয়েকজন এসে ঘটনার প্রতিবাদ জানালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে দুই গ্র“প গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রহমানিয়া রিজভী ও সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার ঘটনা স্থলে আসেন। অধ্যক্ষের কক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করে। ঘটনার বিষয়ে জেলার বদলগাছী উপজেলা থেকে আসা সিয়াম ও তুফান নামে দুই শিক্ষার্থী জানান, নিয়ম অনুযায়ী আজকে ভর্তির কথা ছিল তাদের। কিন্তু তারা কলেজে এসে দেখেন তাদের ভর্তি না করে পরের সিরায়ালগুলোর শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়েছে। তবে যারা ভর্তি হয়েছে তাদেরকেও দিতে হয়েছে প্রায় ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। সন্তানকে ভর্তি করাতে না পেরে অভিভাবকদের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। এ বিষয়ে সালাউদ্দিন নামে একজন অভিভাবক বলেন, এখন চাকুরীর পাওয়ার চেয়েও ভর্তি হওয়া অনেক কঠিন। সকাল থেকে সিরিয়ালে বসে থেকে আমার মেয়েকে ভর্তি করাতে পারলাম না। আমরা কোন দেশে বাস করছি। আমার মেয়েকে যদি শেষ পর্যন্ত ভর্তি করাতে না পারি তবে তার ভবিষ্যৎ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ড.এস এম জিল্লুর রহমান জানান, আমরা নিয়ম অনুসারেই ভর্তি কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলাম কিন্তু হঠাৎ করে ছাত্রলীগ নামধারী স্বপনের নেতৃত্বে কয়েকজন এসে পিয়নকে মেরে কলেজ ক্যাম্পসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তারা ভর্তির সিরিয়াল ব্রেক করে জোর পূর্বক ভর্তির কোডপিন নিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমত শিক্ষার্থী ভর্তির চেষ্টা করে। এই কারনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে আমরা ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা আজ ভর্তি হতে পারেনি তাদের আর কোন প্রকার ভর্তির সুযোগ নেই।