খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০১৬: স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, এরশাদ সাহেব সুন্দর বক্তব্য দেন, সুন্দর কবিতা লেখেন। তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একটা দোষ আছে ওনার। মাঝে মাঝে সিদ্ধান্ত বদল করেন আর প্রেমিকা বদল করেন, এছাড়া কোনো দোষ নেই ওনার। উনি সিদ্ধান্ত বদল না করলে সংসদে সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের নেতা থাকতেন। রওশন এরশাদকে ধন্যবাদ জানাই তিনি আমাদের সংসদ গঠনে সহায়তা করে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এরআগে সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিটে স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। খালেদা জিয়া দেশের একমাত্র জঙ্গী উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জঙ্গীদের নেত্রী। ওনার পরিবর্তন হয় নাই। আমি মনে করি একটা জঙ্গী আছে বাংলাদেশে, সেটা হলো খালেদা নিজে জঙ্গী, এছাড়া দেশে কোন জঙ্গী নাই। যারা খুনীদের সাথে হাত মিলায় তাদের সাথে সংলাপ হতে পারে না। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, হরতাল কেউ ডাকে না। কারণ হরতাল হবে না। আমাদের সরকার পরিবর্তন করতে হলে, ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে হবে। এটা সবাই বুঝে গেছে, যে হরতাল করে আগুন জ¦ালিয়ে সরকার পরিবর্তন করা যায় না। তাই এখন মানুষ হরতালের নামে নৈরাজ্য প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আভিযোগ ছিল গ্রামে ডাক্তার থাকে না। ২০১৪ সালে একসঙ্গে ৬ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেয়ার পরে এখন বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামগুলোতে ডাক্তার থাকে, মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পায়। ডাক্তারদের গ্রামে থাকার অভ্যাস হয়ে গেছে। স¤প্রতি বিসিএসের মাধ্যমে আমরা আড়াই’শ ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছি। সাংসদদের যাদের সম্পদ আছে তাদের স্থানীয় হাসপাতালগুলোকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সরকারের ভুলত্রুটি থাকতে পারে। শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগে। এক সময় আমরা অন্ধকারে ছিলাম, এখন আলোকিত বাংলাদেশ হয়ে গেছে।
এদিকে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর প্রথম জিয়ারত করেছি। আমার এখনও ইচ্ছা হয় জাতির জনকের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করি। কিন্তু তিনি তো আমার জনক নন, তিনি আওয়ামী লীগের জনক। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সার্বজনীন করার দাবিও জানান। এরশাদ সবসময় আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছেন দাবি করে বলেন, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের সাথে একসাথে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছি। আমরা যুগপত আন্দোলন করে অত্যাচারি বিএনপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছি। ১৯৯৬ সালে সমর্থন দিয়ে ২১ বছর পর আপনাদের ক্ষমতায় এনেছি। ২০০৬ সাথে মহাজোট গঠন করে ২০০৮ সালে আপনাদের বিশাল জয় এনে দিয়ে দিয়েছি। সবসময় আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয়পার্টির নীতি-আদর্শে পার্থক্য আছে, কিন্তু দেশ ও জাতির কল্যাণে এক ও অভিন্ন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে জনগণ সংসদে সরকারি দলের ভুলত্রুটি তুলে ধরার জন্য ম্যান্ডেড দিয়েছে জানিয়ে এরশাদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এই দায়িত্বপালনে যদি আমরা ব্যর্থ হই তাহলে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। সরকারের বন্দনা করার জন্য সরকারি দল রয়েছে। জনগণের কাছে আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।
এছাড়া, ৩৭ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করা হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে উদ্দেশ করে বলেছেন, এই অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? এটা জনগণের টাকা, পেনশন ভোগীদের টাকা। এই টাকা আপনি মওকুফ করে দিয়েছেন। এই অধিকার আপনাকে আমরা দেইনি। তিনি বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, অর্থমন্ত্রী বিরাট বাজেট দিয়েছেন। বাজেট বড় হলেই জনগণের জনগণের কল্যাণ হবে তা বলা যাবে না। বাজেট দেয়ার পর ব্যবসায়ীরা বলেছেন এমন জটিল বাজেট তারা আর দেখেনি। তারা যদি এ কথা বলে তাহলে কিভাবে হবে? এ সময় ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতকারী ও অর্থ পাচারকারীদের বিচারের দাবি জানান তিনি। বাজেটে কোন সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা লুটেরা তাদের বিচার করতে পারেন না। তারা মাথা উঁচু করে আছেন। আমার সময় তো কোনো ব্যাংক জালিয়াতি হয়নি। পারলে দেখান আমার সময় কোন ব্যাংক লুটপাট হয়েছে। আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। ২০১১-১২ সালে শেয়ারবাজারে ধস নেমেছিল উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা এখনও তা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমি শেয়ার বাজারে গিয়েছিলাম। কান্না শুনেছি, আর্তনাদ শুনেছি। জনাব ইব্রাহীমের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির রিপোর্ট আমরা জানতে পারিনি, কোন প্রভাবও দেখিনি। তাহলে এই কমিটি করে লাভ কী