খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৯ জুন ২০১৬: ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হতে পারেননি রবি শাস্ত্রী। গত ১৮ মাস ‘টিম ডিরেক্টর’ হয়ে ভার সামলেছেন। প্রতিদান হিসেবে প্রত্যাশা করেছিলেন স্থায়ী নিয়োগের। তা না পাওয়ায় হতাশা তো আছেই। তবে শাস্ত্রী মনে করেন, তাঁকে এক ধরনের অবজ্ঞা করা হয়েছে। অপমানের শিকার হয়েছেন। এত দিন দায়িত্ব পালনের পর এই প্রতিদান তিনি পেতে পারেন না। এত দিন রাখঢাক করে বললেও এবার সরাসরিই সৌরভ গাঙ্গুলির দিকে তাঁর তির।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নতুন কোচ নির্বাচনের ভার দিয়েছিল উপদেষ্টা পরিষদকে। এই উপদেষ্টারা যখন সাক্ষাৎকার নিচ্ছিল, অন্যতম সদস্য হয়েও সেখানে সৌরভ ছিলেন না। সৌরভের আচরণকে ‘অসম্মান’ হিসেবেই দেখছেন শাস্ত্রী।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরপরই ‘টিম ডিরেক্টর’ হিসেবে অন্তর্র্বতী দায়িত্বের মেয়াদ শেষ করেন শাস্ত্রী। বোর্ড নতুন করে একজন প্রধান কোচ নিয়োগের পরিকল্পনা নিলে শাস্ত্রীও আবেদন করেন। দলটাকে এখন তো সবচেয়ে ভালো তিনিই চেনেন। এই ছিল তাঁর যুক্তি। ৫৭ জন আবেদনকারী থেকে ২১ জনের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হলে সেখানেও ছিলেন। কিন্তু দায়িত্বটা শেষ পর্যন্ত পেলেন অনিল কুম্বলে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সৌরভই তাতে প্রধান ভূমিকা রেখেছেন।
ভিডিও কনফারেন্সে উপদেষ্টা কমিটির কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন শাস্ত্রীও। সেখানে শচীন টেন্ডুলকার, ভিভিএস লক্ষণসহ উপস্থিত ছিলেন কমিটির অন্যতম সদস্য সঞ্জয় জাগদালেও। কিন্তু সৌরভ ছিলেন না। ব্যাপারটা যে শাস্ত্রীর ভালো লাগেনি। এত দিন আকারে-ইঙ্গিতে জানিয়ে আসছিলেন তা। কিন্তু ইন্ডিয়া টুডের কাছে উগরে দিয়েছেন নিজের সব ক্ষোভ, ‘এমন নয় আমার মেজাজ খারাপ। আমি কেবল হতাশ। আসলে ক্রিকেটে এত কিছু ঘটে, এখন অবাক হই না। সৌরভের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কিছু তো আর নেই। তবে আমি হতাশ তো অবশ্যই। কারণ সে সাক্ষাৎকারপ্রার্থী এবং তাকে যে দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছিল তার প্রতি প্রতি অসম্মান ও অবজ্ঞা দেখিয়েছে।’
মেজাজ যে শাস্ত্রীর আসলেই খারাপ, সেটা আরও বোঝা যাবে সৌরভের উদ্দেশে দেওয়া পরের ‘পরামর্শে’, ‘পরেরবার অবশ্যই মিটিংগুলোতে থেকো, বিশেষ করে মিটিংটা যদি এটার মতো গুরুত্বপূর্ণ হয়।’
‘টিম ডিরেক্টর’ হিসেবে গত ১৮ মাসে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। বেশ কিছু কর্ম-পরিকল্পনাও হাতে নিয়েছিলেন। নতুন মেয়াদে কোচ হলে সেই পরিকল্পনাগুলোর একটা সুন্দর বাস্তবায়ন সম্ভব হতো বলে অভিমত শাস্ত্রীর, সে কারণেই মূলত তাঁর হতাশাটা। তবে অনিল কুম্বলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পাওয়াকে স্বাগতই জানিয়েছেন তিনি, ‘কুম্বলে সবকিছুই সাজানো-গোছানো অবস্থায় পাচ্ছে। ওর কাজটা সহজই হবে বলে আশা করছি।’
সবশেষে সৌরভকে একটা ‘সৎ’ পরামর্শও দিয়েছেন শাস্ত্রী, ‘এখন থেকে ব্যাপারটা মাথায় রাখুক সৌরভ। সে যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের দায়িত্ব পালনের সময় এই সব বৈঠকে উপস্থিত থাকে।’