Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

25খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৫ জুলাই ২০১৬: গুলশানে হামলার পর বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের সতর্ক ও নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছে নিজ নিজ দেশগুলো। এ ঘটনায় পর বাংলাদেশে কাজ করে এমন গার্মেন্টস ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা তাদের সফর বাতিল করেছেন। সোমবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায়।
জাপানি মালিকানার পোশাক ব্রান্ড ‘ইউনিকলো’ জানায় তাদের সব কর্মকর্তার বাংলাদেশ সফর স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। গার্ডিয়ান আরও জানায় ‘বাংলাদেশে ইউনিকলো’র ১০ জন জাপানি কর্মকর্তা কাজ করছেন।
মার্কস, স্পেন্সার ও গ্রাপ-এর মতো বড় কোম্পানিতে তৈরি পোশাক সরবরাহ করে স্প্যারো গ্রুপ। কোম্পানিটির প্রধান শোভন ইসলাম জানান, ‘গত বছর জাপানি ও ইতালি নাগরিক জঙ্গিদের হাতে খুন হন। ওই ঘটনার পরেই আমাদের অর্ডার পেতে বেশ বেগ পেতে হয়। অনেক বিদেশি বায়ার বাংলাদেশে তাদের মিটিং বাতিল করে। পরে সেই মিটিং ব্যাংকক, দিল্লি ও হংকং গিয়ে করতে হয়েছে। গুলশানে ২০ বিদেশি হত্যার ঘটনায় পর আমাদের অবশ্যই অর্ডার পেতে বেশ কষ্ট করতে হবে।’
ভারতের গুরগাওয়ে অবস্থিত অরিয়েন্ট ক্রাফট নামের পোশাক কারখানা মালিক সুধির ধিনঙ্গরা। তিনি জানালেন, এমন হামলার পর বায়াররা অবশ্যই ভিন্ন কিছু ভাবছেন। আমি উচ্চ পর্যায়ের কয়েকজন বায়ারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে তারা যেতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন, এর ফলে অর্ডারও বাতিল হতে পারে।
বাংলাদেশি পোশাক রফতানিকারক ওয়েগা ফ্যাশন সুয়েটারের মালিক মেসবাহ উদ্দিন জানান, দুঃখজনক হলেও গুলশান হামলার ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৬ জনের সঙ্গেই আমি ব্যবসা করেছি।
জাপানের নির্মাণ কোম্পানি ওবায়াসি ও সিমিজু দ্রুটি প্রতিষ্ঠানের অন্তত এক ডজন কর্মকর্তা বাংলাদেশে সেতু নির্মাণের কাজ করছেন। কোম্পাটি দুটি জানায়, তারা তাদের কর্মচারীদের ঘরে থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
তবে সুইডেনের ‘এইচ অ্যান্ড এম’ ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক অন্যসব পোশাক আমদানিকারকদের মতোই বলেছে গুলশান হামলার কারণে তাদের কোনও অর্ডার বাতিলের আশঙ্কা নেই। তবে আমরা বিষয়টি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত পৌনে নয়টায় গুলশান কূটনৈতিক এলাকার ৭৯ নম্বর সড়কের স্প্যানিশ রেস্তোরা ‘হলি আর্টিজান বেকারি’ দুষ্কৃতকারীদের হামলার শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের একটি দখল সেখানে গেলে দুষ্কৃতকারীরা গুলিবর্ষণ ও গ্রেনেড ছোড়ে। এতে পুলিশের ডিবি’র সহকারী কমিশনার রবিউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন নিহত হন। এরপর দুষ্কৃতকারীরা সেখানে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের রাতভর জিম্মি করে রাখে। অন্তত ২০ জন বিদেশিকে গলাকেটে হত্যা করে। অবশেষে শনিবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে অবশিষ্ট জীবিতদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে। এ সময় এক জঙ্গিকে জীবিত আটক করে। সকাল আটটা চল্লিশ শেষ হয় এ অভিযান।