খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ জুলাই ২০১৬: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের কাছে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনার একদিন পর শুক্রবার সকালে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষ আতঙ্কে এখনও খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে যাচ্ছে না। পালিয়ে যাওয়া হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ র্যাব, বিজিবির তল্লাসি চলছে।
এদিকে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা নিহত দুই পুলিশ সদস্যের প্রথম জানাযা কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের গাইটাল পুলিশ লাইনস মাঠে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিহত দুই পুলিশের তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সায়েম এ বিষয়টির নিশ্চিত করে বলেন, কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনসে কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল হকের জানাযা শেষে লাশ তাদের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। কনস্টেবল জহিরুল ইসলামের মৃতদেহ ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় এবং আনসারুল হকের মৃতদেহ নেত্রকোনার মদন থানায় গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
শোলাকিয়ায় ঈদ নামাজের নিরাপত্তার জন্য বসানো চেকপোস্টে তল্লাসির সময় বৃহস্পতিবার সকালে এক সন্ত্রাসী পুলিশের এক সদস্যের ঘাড়ে অতর্কিতে চাপাতির কোপ দেয়। এ সময় সেখানে থাকা আরও সন্ত্রাসী গুলি, বোমা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশ পাল্টা গুলি শুরু করলে সন্ত্রাসীরা পালাতে শুরু করে। এ সময় এক হামলাকারী নিহত হয়। পরে পুলিশের অভিযানে এক হামলাকারী অস্ত্র-চাপাতিসহ হাতেনাতে ধরা পড়ে। সন্দেহভাজন আরও তিনজনকে আটক করা হয়।
সন্ত্রাসীদের হামলায় কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল হক নিহত হয়। এ ছাড়া গোলাগুলির একপর্যায়ে ঘটনাস্থলের পাশের একটি বাড়ির জানালা দিয়ে গুলি ঢুকে নিহত হন ঝর্ণা রানী ভৌমিক নামে এক গৃহবধু।
এদিক হাতেনাতে আটক হামলাকারীর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে জানা গেছে, শোলাকিয়ায় কমপক্ষ ৮ দুর্বৃত্ত হামলা চালায়।
শোলাকিয়া ঈদগাহের একশগজ পূর্বে আজিমুদ্দির উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় হামলাকারীদের বোমা হামলা ও পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে দুই পুলিশ সদস্যসহ ৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে হামলাকারী একজন রয়েছেন। এছাড়া গুলিতে ঝর্ণা রানী ভৌমিক (৩২) নামে স্থানীয় এক নারীও নিহত হন।
এ ঘটনায় আরো ছয় পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। আহত ছয় পুলিশকে প্রথমে ময়মনসিংহ পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে আবু মুক্তাদিন নামে এক হামলাকারীকে হাতেনাতে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে। এ ছাড়া সন্দেহভাজন আরও তিনজনকে আটক করা হয়।