Fri. Jun 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

35খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৯ জুলাই ২০১৬: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলায় আটক জঙ্গি আবু মোকাদ্দেল ওরফে শরিফুল ইসলাম ওরফে সোহান প্রায় আড়াই বছর ধরে নিখোঁজ ছিল। তার বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের পাশে দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামে। সোহানের আটক হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপন করেছে। এ ঘটনায় জঙ্গি শরিফুল ইসলাম ওরফে আবু মোকাদ্দেল এর চাচাতো ভাই এনামুল হক (২৫)কে জিজ্ঞাসাবাদেও জন্য আটক করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের এক কিলোমিটার দূরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে ময়মনসিংহ থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব। বর্তমানে সে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ এর লেফটেন্যান্ট কর্নেল শরীফ বৃহস্পতিবার বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে, ঘোড়াঘাটের প্রত্যন্ত গ্রাম দক্ষিণ দেবীপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ির মূল ফটকে তালা ঝুলছে। স্থানীয়রা জানান, বাড়িতে থাকতেন সোহানের মা ও দুই বোন। কিন্তু তারা কেউ বাড়িতে নেই।তার প্রতিবেশীরা জানান, সোহানের ধরা পড়ার খবর লোকমুখে শুনে তারা রাতেই বাড়িতে তালা দিয়ে অন্য কোথাও চলে গেছেন। তবে কোথায় গেছেন বলতে পারে না কেউ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোহানের বাবার নাম আব্দুল হাই প্রধান। পেশায় তিনি রেডিও-টিভি’র ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি। গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে বিভিন্ন হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে বাড়িতে থাকেন না তিনিও। তবে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে যানা গেছে।স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার ঈদের দিন বাড়িতে সোহানের মা ও দুই বোন ছিলেন। কিন্তু, সন্ধ্যায় শোলাকিয়ার হামলার ঘটনায় সোহানের সম্পৃক্ততার কথা জানাজানি হওয়ায় রাতেই তারা বাড়ি ছাড়েন।তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সোহানের মূল বাড়ি ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩নং সিংড়া ইউনিয়নের মারুপাড়া গ্রামে। গত ৫ বছর ধরে তারা বসবাস করছেন রানীগঞ্জ বাজারের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ দেবপুর গ্রামে। দাখিল পাশ করার পর থেকেই বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ রয়েছেন সোহান। তিনি বিরামপুর উপজেলার বিজুল দারুল হুদা কামিল মাদ্রাসায় পড়তেন। গত আড়াই বছর ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সোহানের এলাকায় গিয়ে তার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে। এ সময় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহে সোহানের চাচাতো ভাই এনামুল হককে আটক করে র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। র‌্যাব-১৩ দিনাজপুর সিপিসি-১ ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আব্দুল্লাহ-আল মাহমুদ রাজু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে আটক করা হয়নি।
অন্যদিকে, ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, তার বাবা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সোহান দাখিল পাশ করার পর থেকেই নিরুদ্দেশ ছিলো। তার মা শিউলী বেগম এবং বোনও শোলাকিয়ার ঘটনার পর থেকে বাড়ি ছেড়েছেন। তাদের অনুসন্ধান চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে এলাকার কেউ কেউ বলছেন, তার মাকেও র‌্যাব ধরে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এর সত্যতা পাওয়া যায়নি এখনও। তবে সোহানের বাবা হাই প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা থাকার কথা জানাতে পারলেও সোহানকে খুঁজে পেতে আড়াই বছর আগে তার পরিবার জিডি করেছিল কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি ঘাড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধুরী।