Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

36খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৯ জুলাই ২০১৬: রাজধানীর গুলশানের স্পানিশ রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিসানে হামলাকারীদের লাশ গ্রহণের জন্য তাদের পরিবার ও স্বজনদের কাছে চিঠি পাঠানো হবে। চলতি সপ্তাহে এই চিঠি পাঠানো হতে পারে বলে জানা গেছে।
আইএসপিআরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ৫ হামলাকারী ও হামলায় সহয়তাকারী একজনের লাশ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) রাখা হয়েছে। সরকারি ছুটি চলার কারণে লাশ হস্তান্তর আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, নিহতদের লাশ নিতে এখনো কারো পরিবারের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমরা অপেক্ষা করছি। এছাড়া ইতোমধ্যে হামলাকারীদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্ত করা পরিচয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
নিহতদের স্বজনেরা কেন যোগাযোগ করেনি এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, আসলে গুলশানে ওই ঘটনার পর থেকে দেশে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি পরিবারগুলো আতঙ্কে রয়েছে। তারা যোগাযোগ করতে ভয় পাচ্ছেন।
এদিকে লাশ গ্রহণের বিষয়ে নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাশ গ্রহণের সময় কিংবা পরবর্তী সময়ে তারা নানা ধরনের হয়রানির শিকার হতে পারেন বলে ভয় পাচ্ছেন।
হয়রানির বিষয়টি উল্লেখ করে হামলাকারী সামিহ মোবাশ্বিরের ভাই সাদ্দাম মোবাশ্বির বলেন, সামিহ নিখোঁজের পর গুলশান হামলার ছবি দেখে আমরা তাকে সনাক্ত করি। কিন্তু ছবি দেখে তো সব বিশ্বাস করা যায় না। আর আমরা খবর নিতে গেলে হয়রানির শিকার হব- এই ভয়ে খবর নিতে যাই না।
এছাড়া একই ঘটনায় হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজের বাবা ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর গণমাধমে ছবি দেখে আমরা তাকে প্রথম শনাক্ত করি। এ ঘটনায় বিস্মিত হই। লাশ গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তবে হয়রানির ভয়ও পাচ্ছি।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হামলাকারী রোহান ইমতিয়াজ, মীর সাবিহ মুবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, আন্দালিব আহমেদ, রাইয়ান মিনহাজ ও স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিসানের সেফ (রাঁধুনী) সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের লাশ রাখা আছে। বাংলাদেশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে- সাইফুল ইসলাম চৌকিদারকে ভুলবশত জঙ্গি বলেছিল পুলিশ।
গুলশান হামলাকারীদের মধ্যে গত ফেব্র“য়ারি ও মার্চ মাসে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় নিরবাস ইসলাম, রোহান ইমতিয়াজ, মীর সামিহ মোবাশ্বির। তবে আইএসের বরাতে সাইট ইন্টেলিজেন্স যে ৫ হামলাকারীর নাম বলেছে তারা হল- আবু উমায়ের, আবু সালমা, আবু রাহিক, আবু মুসলিম ও আবু মুহারিব। এদিকে অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তাদের আগের ছবি ও মৃত্যুর পরের ছবি মিলিয়ে সাইট ইন্টেলিজেন্সের ওই পাঁচজনের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়।
গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের স্পানিশ রেস্টেুরেন্ট হলি আর্টিসানে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। আইএসপিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়- রাতেই সন্ত্রাসীরা ১৭ জন বিদেশি নাগরিক ও ৩ বাংলাদেশিকে হত্যা করে। শনিবার সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে বিমান, নৌ বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশের সমন্বিত ‘থান্ডারবোল্ট’ কমান্ডো অভিযান চালানো হয়। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে শুরু হওয়া কমান্ডো অভিযানের ১২/১৩ মিনিটের মধ্যে সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে টার্গেট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। সাড়ে ৮টায় অভিযানের সফল সমাপ্তি করা হয়। অভিযানে জীবিত উদ্ধার করা হয় ১৩ জনকে। এ সময় ৭ সন্ত্রাসীর মধ্যে ৬ জন নিহত হন। সন্দেহভাজন এক সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার হয়।
ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত পিস্তল, ফোল্ডেট বাঁট একে ২২ রাইফেল, বিস্ফোরিত আইইডি, ওয়াকিটকি সেট ও অনেক ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অভিযানে অংশগ্রহণকারী সদস্যদের কেউ হতাহত হননি।