Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

11kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০১৬: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরীর সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তদন্ত করতে পুলিশের চার সদস্যের টিম ভারত যাচ্ছে।
উচ্চপর্যায়ের এ টিমের নেতৃত্ব দেবেন গোয়েন্দা ও অপরাধ তথ্য বিভাগ (উত্তর)-এর উপ-পুলিশ কমিশনার শেখ নাজমুল আলম। অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শাহজাহান, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুল আলম রাসেল এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ফজলুল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ পরিদর্শক মো. ফজলুল হক গত ১৫ই জুন ডিবির এআইজির কাছে একটি আবেদন জমা দেন। ওই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, এজাহারভুক্ত আসামি মোহাম্মদ আসলাম চৌধুরী ভারতে যেসব স্থানে অবস্থান করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধ পন্থায় উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করেন ওইসব স্থান পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহের জন্য ভারতে যাওয়া একান্ত প্রয়োজন। এতে তিনি কোন কোন কর্মকর্তা যাওয়া প্রয়োজন তাদের নাম উল্লেখ করেন।
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসলাম চৌধুরী অবৈধ পন্থায় নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করতে দলের পক্ষ থেকে গত ৫ই মার্চ ভারত যান। ৫ই মার্চ থেকে ৯ই মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করতে বাংলাদেশের জনৈক নাগরিক শিপন, সঞ্জীব ও মতিন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কবহির্ভূত রাষ্ট্র ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। ওই সাক্ষাতের বেশকিছু ছবি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। ৫ই মার্চ থেকে ৯ই মার্চ পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করার সময়ে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্য/ এজেন্টের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় সফর করেন এবং একাধিক বৈঠকে মিলিত হন। তারা বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারকে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উৎখাতের জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের নীলনকশা প্রণয়ন করেন। এ নীলনকশা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে ওই বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধভাবে উৎখাতের জন্য সন্ত্রাস, নাশকতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এটা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল।
আবেদনে তিনি বলেন, ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদি এবং শিপন, মতিনের সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্র, সরকার ও সার্বভৌমত্ব ধ্বংস এবং উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেন। এর আগে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর/ অক্টোবরে সঞ্জীব শিপনের সঙ্গে আসলাম চৌধুরীকে পরিচয় করিয়ে দেন। আসলাম চৌধুরীর গুলশানের নিকেতনের বাসায় আসলাম, সঞ্জীব, শিপন ও জনৈক ভারতীয় নাগরিক বৈঠকে মিলিত হন। এ মিটিংয়ের ধারাবাহিকতায় আসলাম চৌধুরী ২০১৫ সালের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যে যান।
লন্ডনে অবস্থানরত রাজনৈতিক নীতি নির্ধারণী মহলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধ পন্থায় উৎখাতের ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করেন। আবেদনে বলা হয়, ধারণা করা হচ্ছে সাম্প্রতিককালে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্কিত রিতা কার্টেজ দ্বারা পরিচালিত সাইট ইন্টেলিজেন্স কর্তৃক প্রকাশিত আইএসআইএস ও আল কায়েদা নামে বাংলাদেশের বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড, বোমাবাজি ঘটনার দায় স্বীকারের সঙ্গে ওই ষড়যন্ত্রের যোগসূত্র রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলার বিঘœ সৃষ্টি করে জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করতে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে অবৈধ পন্থায় উৎখাতের জন্য ৫ থেকে ৯ই মার্চ বিভিন্ন বৈঠকের মাধ্যমে এবং ৫ই মার্চ তারিখের আগে এবং ৯ই মার্চ তারিখের পরে বিভিন্ন সময়ে তার বর্তমান বাসা কাম অফিসে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে সন্ত্রাস, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করেন। এছাড়া বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয় মর্মে মিথ্যা প্রচারণা চালান। এটা দেশের অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ বিধায় রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পর বিষয়টি অগ্রগামী করে একই দিনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠান ডিবি উত্তরের ডিসি শেখ নাজমুল আলম। এরপর ২০শে জুন বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (ক্রাইম) এর কাছে পাঠায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এর ভিত্তিতে ২৯শে জুন তদন্তকারী টিমের ভারত সফর সংক্রান্ত চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। এখন ওই চিঠিটির বিপরীতে সরকারি আদেশ জারির প্রক্রিয়া চলছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।