Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

Rajshahiখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০১৬: আলিফ হোসেন,তানোর,রাজশাহী: রাজশাহীর তানোর উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতালে জনবল সঙ্কট ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের দায়িত্বঅবহেলার কারণে স্বাস্থ্য সেবা মূখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এছাড়াও রোগী ধরা দালাল ও ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের চরম দৌরাতেœ্য রোগীরা সুষ্ঠু চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালটি ২৯ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়েনি স্বাস্থ সেবার মান। এখানে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণ। হাসপাতালের অধিকাংশ চিকিৎসক নিয়মিত অফিস করে না, আবার টাকা নিয়ে রোগী দেখেন ও কমিশনের আশায় নিদ্রিষ্ট ক্লিনিকে রোগী পাঠায়। এছাড়াও রোগীদের খাবারের মান অত্যন্ত নিুমানের ও খাবার অযোগ্য। কিšত্ত তাঁর পরেও রোগীদের সেই খাবার পরিমান মতো দেয়া হয় না। বন্ধ্যাকরণ ও এমআর করতে আসা ভুক্তভোগীদের কাছে থেকে বিভিন্ন কৌশলে অর্থ আদায় করা হয়। আবার টাকার লোভে অবৈধ গর্ভপাত করানো হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ২৮ জন চিকিৎসকের বিপরীতে মাত্র ১৮ জন চিকিৎসক রয়েছে এর মধ্যে আবার ১০ জন চিকিৎসক ডেপুটেশনে অন্যত্র রয়েছেন ও ১০টি চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে। এছাড়াও ১৪ জন নার্সের (সেবিকা) বিপরীতে মাত্র ৭ জন নার্স কর্মরত রয়েছেন ও নার্সের ৭টি পদ শূণ্য রয়েছে। হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, স¤প্রতি পাঁচন্দর ইউপি এলাকার জনৈক ব্যক্তির স্ত্রীকে (গর্ভবতী) মূমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সারাদিন প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওই প্রসূতী ছটফট করলেও কোন চিকিৎসকের সাক্ষাত পায়নি। ফলে সন্ধ্যায় প্রসূতীর স্বজনরা বিষয়টি নিয়ে টিএইচও সাহেবকে অভিযোগ করায় চিকিৎসক গভীর রাতে ওই প্রসূতীকে জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে বের করে দেন। গভীর রাতে ভুটভুটি যোগে প্রসূতীকে নিয়ে বাড়ি যাবার পথে রাস্তায় সন্তান প্রসব করে। আবার ক্লিনিক থেকে কমিশনের আশায় হাসপাতালের এক্সরে মেশিন, এ্যাস্বুলেন্স, জেনারেটর ও অধিকাংশ বৈদ্যৃতিক পাখা দীর্ঘদিন থরে নস্ট করে রাখা হয়েছে। যাতে রোগীরা হাসপাতালে না থেকে ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হয়।
অপরদিকে হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারি বলেন, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোগীদের জন্য উন্নত খাবার পরিবেশন করার কথা থাকলেও এসব উন্নত খাবার হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ নিজেরা হরিলুট করে। একই দিন হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা দুই ওয়ার্ডে মোট ১৮ জন রোগী (ভর্তি) চিকিৎসাধীন থাকলেও খাতায় ২৯ জন রোগী দেখানো হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে একাধিকবার স্থানীয় সাংসদ এমপি হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে হাসপাতালের নোংরা ও দুড়ন্ধযুক্ত পরিবেশ এবং চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন। কিšত্ত তাতেও হাসপাতালের অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। এব্যাপারে তানোর হাসপাতালের কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা, ইসমাত আরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি যোগদানের পরে এখানে চিকিৎসা সেবার মাণ অনেকটা উনীœত করা হয়েছে, তবে জনবল সংকটের কথা স্বীকার করেছেন।