Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০১৬: শিপলু জামান ঝিনাইদহ : ঢাকার গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলাকারী নিবরাস ইসলামই গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের ঝিনাইদহে দুই পুরোহিত-সহ অন্তত পাঁচটি খুনের হোতা ছিল বলে মনে করছে পুলিশ।

মাস ছয়েক আগে বাড়ী থেকে পালানোর পরে নাম ভাঁড়িয়ে এই শহরেই গা-ঢাকা দিয়ে ছিল ঢাকার ধনী পরিবারের ছেলে অনর্গল ইংরেজি বলতে পারা নিবরাস। তার সঙ্গে থাকত অন্তত সাত জন তরুণ। আর এ তরুণরা কি ঝিনাইদহের দুই পুরোহিতসহ অনন্ত পাচটি খুনের মূল হোতা এই প্রশ্নটি সবার মনে ?

জুলাইয়ের প্রথম রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশি-সহ ২০ জনকে হত্যা করে পাঁচ জঙ্গি। তার আগে গত কয়েক মাসে খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ শহরে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটে।

মুখঢাকা মোটরসাইকেল আরোহীরা কুপিয়ে খুন করেছে দুই পুরোহিত, এক খ্রিস্টান চিকিৎসক, শিয়া স¤প্রদায়ের এক কর্তা ও আওয়ামী লীগের এক স্থানীয় নেতাকে।

এর মধ্যে কাষ্ঠসাগরা গ্রামের রাধামদন গোপাল মঠের সেবায়েত শ্যামানন্দ দাস খুন হন গুলশানে হামলার দিনের সকালেই। জুনের সাত তারিখে আনন্দগোপাল গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক পুরোহিত খুন হন। ১৫ মার্চ খুন হন শিয়া নেতা আব্দুর রজ্জাক। এর আগে জানুয়ারিতে খ্রিস্টান হোমিও চিকিৎসক সামির আলির চেম্বারে ঢুকে কুপিয়ে যায় আততায়ীরা।

গুলশানে হামলার পরে জঙ্গিদের ছবি দেখে ঝিনাইদহের অনেকে তাকে স্থানীয় এক মেসের বাসিন্দা সাইদ বলে চিহ্নিত করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশে বিশেষ তদন্তকারী দল ঝিনাইদহে গিয়ে জানতে পারে, প্রাক্তন এক সেনাকর্মীর বাড়ীতে ভাড়া থাকত নিবরাসরা। যে সময়ে সে নিখোঁজ হয়েছিল, সেই সময়েই স্থানীয় মসজিদের ইমাম রোকনুজ্জামান তাকে ঝিনাইদহে এনে তোলে।

ঢাকা পুলিশের দলটি বাড়ির মালিক কওসর আলি, তার দুই ছেলে, ইমাম রোকনুজ্জামান ও তার এক সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গিয়েছে।

তবে স্থানীয় থানা এ বিষয়ে কিছু জানে না। বাড়ীর মালিকের স্ত্রী বলেন, ‘‘ইমাম ওদের এনে দেয়ায় আমরা সন্দেহ করিনি। ওদের সম্পর্কে আমরা কিছুই জানতাম না।’’

স্থানীয়রা বলছেন, নিবরাস ওরফে সাইদ পাড়ায় ফুটবল খেলত আর অনর্গল ইংরেজি বলতে পারত।

ঢাকার সম্ভ্রান্ত স্কুলের পরে ঢাকার বেসরকারি নর্থসাউথ বিশ্বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই জামাতের শাখা ইসলামি ছাত্র শিবির ও জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সংস্পর্শে আসে নিবরাস।
পরে মালয়েশিয়ার একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে আন্তর্জাতিক জেহাদি সংগঠনগুলির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। সেখান থেকে ফিরে এ বছরের গোড়ায় শুধু পাসপোর্টটি নিয়ে বাড়ি ছাড়তে নিবরাস।

পুলিশ মনে করছে, ঝিনাইদহে একের পর এক খুন করে হাত পাকিয়েই সে গুলশানের অভিযানে সামিল হয়।