খোলা বাজার২৪, রোববার, ১৭ জুলাই ২০১৬: এস.এম.আবু ওবাইদা-আল-মাহাদী, কুষ্টিয়া : বর্তমান সরকারের তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত কল্পে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মতো উদ্যোগ গ্রহন অত্যান্ত প্রশংসনীয়। গরীবের হাসপাতাল নামে খ্যাত কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের সাতবাড়ীয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বহুবিধ সমস্যার ভারে নিজেই এখন রুগী। প্রায় ৪৮ শতক জমির উপর নির্মিত সাতবাড়ীয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এর পূর্বনাম ছিল বক্তারমল মেমোরিয়াল দাতব্য চিকিৎসালয়। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দেখলেই বোঝা যায় প্রাচীন স্থাপত্য শৈলী’র এক অর্পূব নির্দশন। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়, সংস্কারের অভাবে আজ সেটি বিলুপ্তির পথে।
গতবারের ভুমিকম্পে বিল্ডিং এর ছাদ ফেটে যাওয়ায় মারাত্বক ঝুকিতে আছে ভবনটি। এখন বর্ষাকাল হওয়াতে ভবনটির ছাদের ফাটল দিয়ে পানি পড়ছে। ফলে ভবনটি মারাত্বক ঝুকিতে রয়েছে। যে কোন মূহুর্তে বিল্ডিং এর ছাদ ভেঙ্গে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ডাক্তারদের কোয়াটার ও তৃতীয় শ্রেনীর কোয়াটার অনেক আগেই পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হযেছে। বিগত ২০ বছর আগে সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেলেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় পার্শ্ববর্তী জমির মালিকেরা দিনের পর দিন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গা জবর দখল করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে চলতে থাকলে ক্রমেই বেহাত হয়ে যাবে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের জায়গা।
সংরক্ষিত ফাইল পত্রে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ১লা মার্চে পরিদর্শনে এসেছিলেন ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শান্তি মনি চাকমা। ২৯ শে আগষ্ট ২০১৫ সালে পরিদর্শনে এসেছিলেন, সিভিল সার্জন মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ১১ই মে ২০১৬ সালে পরিদর্শনে এসেছিলেন উপজেলা হেলথ এ্যাডমিনিষ্টেটর মোঃ আব্দুল মমিন। তাহারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সংকট, পানি লাইনের সমস্যা ও চারপাশের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের সুপারিশও করেছিলেন। কিন্তু এরপর বেশ অনেকটা সময় অতিবাহিত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় পরিদর্শন নয় এ যেন কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানোর অংশ মাত্র এমনই মনে করেন সচেতন মহল।
সাতবাড়ীয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, এখানে প্রতিদিন ২৪০ থেকে ২৬০ জন রুগী আসে (ঔষধ থাকলে), আর ৯০ থেকে ১২০ জন রুগী আসে (ঔষধ না থাকলে)। তিন জন চিকিৎসক (একজন এম.ও, দুইজন এস.এ.সি.এম.ও) এবং একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফার্মাসিস্ট) নিরলস ভাবে সেবা প্রদান করেন। উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি মেইন রস্তার পাশে হওয়ার কারনে এক্সিডেন্ট এর রুগী প্রায়ই আসতে থাকে। অথচ রুগীর তুলনায় সরবরাহকৃত ঔষধ পত্রাদির পরিমান খুবই নগন্য। ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থা খুবই নাজুক। একটানা বৃষ্টি হলে ছাদে পানি জমে এবং তা আস্তে আস্তে নিচে পড়তে থাকে, এবং কাজের চরম অসুবিধা ঘটায়। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের ও মাতৃদুদ্ধ পানকারী শিশুদের জন্য নেই কোন বসার জায়গা, দীর্ঘসময় তাদেরকে দাড়িয়ে থাকতে হয়। তাদের বসার জন্য দরকার একটি রুমের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের জনসেবা মুলক প্রতিষ্ঠান টির দিকে একটু সু নজর দিবেন আশাকরি।
অতিদ্রুত ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটি মেরামত করে এলাকাবাসীর সেবা গ্রহনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করবেন কর্তৃপক্ষ, এটাই সকলের প্রত্যাশা।