খোলা বাজার২৪, রোববার, ১৭ জুলাই ২০১৬: গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১১তম ‘এশিয়া- ইউরোপ মিটিং’ (আসেম) সম্মেলন উপলক্ষে ১৪ থেকে ১৬ জুলাই মঙ্গোলিয়া সফর করেন। এই সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আসেম সম্মেলনেও জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচিত বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সশস্ত্র জঙ্গিরা হামলা চালায়। হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রথম পদক্ষেপেই নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা এবং আহত হন অর্ধশতাধিক।
জঙ্গিরা রেস্তোরাঁয় থাকা ২০ দেশি-বিদেশি নাগরিককে হত্যা করে। এদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানের, দুজন বাংলাদেশি এবং একজন মার্কিন নাগরিক। পরের দিন কমান্ডো অভিযানের সময় ছয় হামলাকারী নিহত হয়। এ ঘটনার দায় মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস) স্বীকার করেছে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সাইট ইন্টেলিজেন্ট।
এ ঘটনার এক সপ্তাহের মাথায় ঈদের দিন দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদগাহ মাঠের অদূরে পুলিশের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ সময় দুই পুলিশ সদস্য ও এক নারী নিহত হন। এ সময় এক জঙ্গিও নিহত হয়।
এর পরই বিএনপি পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, জামায়াতকে সঙ্গে রেখে বিএনপির এই জাতীয় ঐক্যের আহ্বান তামাশা মাত্র।
আজকের সংবাদ সম্মেলনেও সাংবাদিকরা বিষয়টির অবতারণা করেন।
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে দেশের মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়ে গেছে। দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত জঙ্গি প্রতিরোধে গণকমিটি গঠন করা হচ্ছে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারছে, আগুন-বোমা সন্ত্রাস করছে, যুদ্ধাপরাধী- তারা কী বলছে তাদের কথা আলাদা। কিন্তু দেশের যেসব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে সত্যিকার অর্থেই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে উঠবে তাদের ঐক্য গড়ে উঠেছে। যারা ‘সর্প হইয়া দংশন করে আর ওঝা হয়ে ঝাড়ে’ তাদের কথা আলাদা।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আগে মানুষ মনে করত দরিদ্র পরিবারের মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাই বোধ হয় জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, যারা ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছে। তারা কেন এসব করছে? এসব করলে নাকি বেহেস্তের দরজা খুলে যাবে! কিন্তু মানুষ খুন করলে বেহেস্তের দরজা খুলে না।