খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০১৬: গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার আসামি পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ জুলাই) এ দিন ধার্য করেন।
গত ২৩ ফেব্র“য়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন আদালত। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্র“য়ারি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের কপি নথি নিম্ন আদালতে আসে।
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নামে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন।
মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আলাদা দু’টি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া ও আরাফাত রহমান কোকো।
এর তিন দিন পর খালেদা ও কোকোর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল দেন হাইকোর্ট। মামলাটি জরুরি ক্ষমতা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা কেন ‘বে আইনি ও কর্তৃত্ব বহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না -তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। তবে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ পরে আপিল বিভাগে বাতিল হয়ে যায়।
দুদক আইনে গ্যাটকো মামলা দায়েরের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৮ সালে আরেকটি রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। তার আবেদনে হাইকোর্ট আবারও মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় এবং মামলাটি কেন বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ মর্মে রুল জারি করেন।
এ ছাড়া মামলা জরুরি ক্ষমতা বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৭ সালে করা আলাদা একটি রিট আবেদন করা হলে সেটিতেও রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর দুদক মামলাটি সচলের উদ্যোগ নেয়। ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল শুরু হয় রুলের শুনানি।
বিগত চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম শামসুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামীও এ মামলার আসামি।
মামলার ২৪ জন আসামির মধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান, বিএনপির সাবেক মহাসচিব আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া মারা যাওয়ায় এখন আসামির সংখ্যা ২১ জনে দাঁড়িয়েছে।