খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০১৬: খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৮ জুলাই ২০১৬: তানোর, রাজশাহী: রাজশাহীর তানোরের চাঁন্দুড়িয়া ইউপি এলাকায় স্বঘোষিত জ্বিনের বাদশা ও একশ্রেণির কথিত কবিরাজ চিকিৎসার আড়ালে গাঁজাসহ মাদকদ্রব্য বিক্রি ও বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের অপতৎপরতার (ক্যারামতি) কারণে সাধারণ মানুষের জীবন ক্যারাব্যারা (তছনছ) হয়ে উঠেছে। কবিরাজ নাম ধারণ করে এসবের আড়ালে গোপণে তারা গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রি করছে।
ইতিপুর্বে এক কবিরাজের ছোট ভাইকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আইনশৃঋলা বাহিনী আটক করেছিলেন। কিšত্ত জেল থেকে বেরিয়ে এসে আবারো সেই একই কায়দায় মাদক ব্যবসা শুরু করেছে। জানা গেছে, অনেক সহজ-সরল মানুষ তাদের কাছে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারিত ও সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার চোখের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি এসব অপকর্ম করে চলেছেন। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে দিনমজুর এসব কবিরাজ এখন অস্থাবর-স্থাবর মিলে প্রায় কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুইজন কথিত কবিরাজ ও একজন গাঁজা ব্যবসায়ীর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র।
তারা দালাল হিসেবে তিনি নিয়োগ করেছেন গ্রামের কিছু টাউট-বাটপার। দালালদের কাজ বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজার ও জনবহুল স্থানে গিয়ে প্রচার করা এসব কবিরাজ মানবদেহের হাড়ভাঙাসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করছে ও কুদরতি তেলপড়া দিচ্ছেন। দালালদের এসব মিথ্যা প্রচারণায় বিশ্বাষ করে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একব্যক্তি বলেন, তার স্ত্রীর হাতের ব্যথা সারানোর জন্য চাঁন্দুড়িয়া গ্রামের কথিত এক কবিরাজ ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিšত্ত চিকিৎসায় তার স্ত্রীর হাতের ব্যথা তো ভালো না হয়ে আরো বেশি হয়েছে,পরে রাজশাহীতে গিয়ে চিকিৎসা করাতে তার প্রায় একলাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে লোক সমাজে মানসম্মানের ভয়ে তিনি কোনো প্রতিবাদ করেননি। এ রকম অসংখ্য অভিযোগ থাকলেও চক্রটি অত্যন্ত প্রভাবশালী ও মামলাবাজ হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রকাশ্য এসবের কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। এলাকাবাসি জানান, গোপণে তদন্ত করলেই এসব কবিরাজের আসল রুপ ধরা পড়বে। এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন বলেন, তানোরের চাঁন্দুড়িয়া ইউপির বেশকিছু কবিরাজের নামে ডাকযোগে তার কাছে একাধিক অভিযোগ এসেছে। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমোদন ছাড়া কেউ মানবদেহের কোনো চিকিৎসা করতে পারবেন না। এব্যাপারে চাঁন্দুড়িয়া ইউপির (সাবেক) চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন বলেন, এলাকার দুই কবিরাজ ও এক গাঁজা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। তিনি বলেন, এরা অধিকাংশ সময় কবিরাজির আড়ালে গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিক্রি করে এলাকার যুবসমাজকে বিপদগামী করে চলেছেন।