খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২০ জুলাই ২০১৬: ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এই অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো।
বুধবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জিয়াউর রহমান জিয়া এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে বিচারক আগামী ৪ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
অভিযোগ গঠনকৃত আসামিরা হলেন আরিফুল ইসলাম আরিফ, জিকরুল্লাহ ওরফে হাসান, সাইফুল ইসলাম, মাওলানা জুনায়েদ আহমেদ ওরফে জুনায়েদ ওরফে তাহের এবং হাসিব ওরফে আবদুল্লাহ। আসামিদের মধ্যে হাসিব ও জুনায়েদ পলাতক। বাকিরা কারাগারে আটক রয়েছেন। আটক আসামিদের অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় আদালতে হাজির করা হয়।
গত বছর ২ সেপ্টেম্বর ডিবির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান ৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ব্লগ ও ফেসবুকে কথিত ইসলামবিরোধী লেখালেখির কারণেই ওয়াশিকুরকে খুন করা হয়েছে। গত ২৩ মার্চ যাত্রাবাড়ীর নয়ানগরের একটি বাসায় বৈঠক করে ওয়াশিকুরকে হত্যার চূড়ান্ত পরিকল্পনা করা হয়। বৈঠকে কথিত দবড় ভাইদ আবদুল্লাহ ওরফে হাসিব, শরীফ, তাহের ওরফে জুনায়েদ, আবরার, জিকরুল্লাহ, আরিফুল ও সাইফুল উপস্থিত ছিল। পরিকল্পনাকালে ওয়াশিকুরকে চাপাতি দিয়ে মাথায় ও ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যার নির্দেশনা দেয় হাসিব। বৈঠকে আটজন অংশ নিলেও হত্যা করতে যায় চারজন। দুজন চাপাতি নিয়ে ওত পেতে থাকে বাসার কাছে। কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান নেয় একজন, নির্দেশনা অনুযায়ী দূরে থাকে আরেকজন। ওত পেতে থাকা দুই মাদ্রাসাছাত্র জিকরুল্লাহ ও আরিফুল কুপিয়ে হত্যা করে বাবুকে। আর দ্রুত সটকে পড়ে জুনায়েদ ওরফে তাহের নামের আরেকজন। সাইফুল নামের আরেক যুবক চাপাতি নিয়ে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩০ মার্চ তেজগাঁওয়ে বেগুনবাড়ীর দীপিকার ঢালের মোড়ে ওয়াশিকুরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার পর পালানোর সময় এলাকাবাসী আরিফুল ইসলাম, জিকরুল্লাহ ওরফে হাসানকে আটক করে। এ ঘটনায় ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন। ওয়াশিকুর মতিঝিলের ফারইস্ট এভিয়েশন নামের একটি ট্র্যাভেল এজেন্সিতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বাবা টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বেগুনবাড়ীর ৪/৩-এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে সাবলেট থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাজীপুরে।