খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই ২০১৬: গুলশান থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয় সরিয়ে দেওয়ার ‘সরকারি উদ্যোগে’র সমালোচনা করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস প্রশ্ন রেখেছেন, সেখান থেকে কার্যালয় সরিয়ে দিলেই কি সন্ত্রাসী হামলা বন্ধ হবে?
বুধবার এক দোয়া মাহফিলে তিনি বলেন, ‘শুনলাম গুলশানের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার অফিস ওখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।
“দেশবাসীকে এমন কোনো গ্যারান্টি কি দেওয়া হবে যে, গুলশান থেকে বেগম খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরিয়ে দিলে দেশে আর কোনো ঘটনা ঘটবে না। এমনকি ক্রসফায়ারের কেউ খুন হবে না। গুলশান থেকে দেশনেত্রীর কার্যালয় সরানোর পরেও যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে এর দায়িত্ব কে নেবে?”
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ছেলে আরাফাত আব্দুল্লাহ অন্তরের সুস্থতা কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
গুলশান থেকে খালেদা জিয়ার কার্যালয় সরানোর উদ্যোগের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির একটি কার্যালয় (খালেদার রাজনৈতিক কার্যালয়) সরিয়ে দিয়ে বিএনপিকে স্তব্ধ করা যাবে না। তখন ঢাকাসহ সারা দেশের ঘরে ঘরে দেশনেত্রীর কার্যালয় তৈরি হবে।
বিএনপির এই নেতা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় যে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলো, তার প্রেক্ষিতে ওখান থেকে কি বিএনপির অফিস সরিয়ে দেবেন? কিংবা সারা দেশে বিএনপির যে অফিসগুলো আছে, সবগুলোই কি সরিয়ে দেবেন?
“সারাদেশে বিএনপির প্রতিটি কার্যালয় হলো খালেদা জিয়ার কার্যালয়। সেটা কোথাও আবাসিক এলাকাতে, আবার কোথাও বাণিজ্যিক এলাকায়। কোনো রাজনৈতিক দলের অফিস কোন এলাকায় থাকবে, সরকার থেকে এমন কোনো দিক-নির্দেশনা কখনো দেওয়া হয় নাই। সংসদ থেকেও এমন কোনো আইন পাস হয় নাই”, বলেন তিনি।
বিএনপির এই নীতি নির্ধারক বলেন, ‘আমরা কি বেগম খালেদা জিয়ার ড্রইং রুমে গিয়ে মিটিং করতে পারি না। যদি উঠিয়ে দেয়া হয়, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বাড়িতেই যাবো। এটিই হলো স্বাভাবিক। এটাও (গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়) দেশনেত্রীর আরেকটা ভাড়া করা বাড়ি, যেখানে তিনি বসেন-আমরা সেখানে দেখা করতে যাই।’
‘যে যেভাবে পারছে বিএনপির ওপরে সুযোগ নিচ্ছে’ মন্তব্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘তারা ভাবছে, পানি ঘোলা করা হয়েছে মাছ শিকার জন্য। বিএনপির কর্মীদের বিভিন্নভাবে ধরা হচ্ছে, গুম-খুন করা হচ্ছে। সেটির তো খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে না। যে ঘটনাই ঘটুক, যত দোষ নন্দ ঘোষ। এখন দেশনেত্রীর অফিস সরাতে হবে?’
দোয়া মাহফিলের মোনাজাতপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ।
আলোচনা শেষে রিজভী ও অন্তরের সুস্থতায় কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক। মোনাজাতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানেরও সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, যুবদলের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, উত্তরের সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন ভুইয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।