খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০১৬: খন্দকার শাহিন : রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নরসিংদীর শিবপুরের চরখুকি থেকে রুমা আক্তার (৩৫) নামে যে নারীকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেছে, তার পরিবারের দাবি সে মানসিক ভারসাম্যহীন।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছে তার পরিবার। আর তার মুক্তিযোদ্ধা পিতা বলছেন, প্রকৃত অপরাধী হলে তাকে যথোপযুক্ত শাস্তি দেয়া হউক।
গুলশানে জঙ্গি হামলায় জড়িত সন্দেহে গত বুধবার গভীর রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়নের চরখুপি গ্রামের বোনের বাড়ি থেকে রুমা আক্তার নামে নারীকে আটক করে। সে পাশ্ববর্তী পলাশ উপজেলার চরসিন্ধুর ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন বুদু মিয়ার ছোট মেয়ে।
রুমা আক্তারের দুই বিয়ে হলেও বর্তমানে তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। তাঁর শ্রাবণ খাঁন নামে ১৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তাকে বাবার নিকট দিয়ে সে ঢাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সে দুবাইতে গৃহপরিচারিকার ভিসায় গেলেও ৩ মাস পরে ফিরে আসে। বর্তমানে সে ঢাকার বাড্ডা নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। গুলশানে জঙ্গি হামলার সময় হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে এর আশপাশ এলাকায় ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন তার বোন সাবিনা।
গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক রুমা আক্তারের বোন সাবিনা আক্তার বলেন, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর থেকে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন বাসা বাড়িতে বুয়ার কাজ করেন। গত ৬মাস আগে সে মালোয়েশিয়ায় কাজ করতে যায়। কিন্তু ৩ মাস পর সে দেশে ফিরে আসে। একাধিক বার তাকে মানসিক ডাক্তার দেখানো হয়েছে। কিন্ত ভাল হয়নি। কখনো কথনো নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাস্তবেও সে পাগল বলে দাবী করেছে তাঁর বড় বোন সাবিনা আক্তার।
গুলশান ঘটনায় গত ১৯ জুলাই র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) হলি আর্টিসানের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে। ফুটেজে ঘটনার রাতে সন্দেহজনকভাবে চারজনকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যাদের একজন নারীও ছিলেন। আটক করা রুমা আক্তারই ভিডিও ফুটেজের সেই নারী। বিষয়টি স্বীকার করলেও রুমার বড় বোন সাবিনা আক্তার দাবী করেন, রুমা জঙ্গি নয়।
গুলশানের ঘটনায় নিজের মেয়ে গ্রেপ্তার হওয়ায় বিব্রত রুমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা শাহাবুদ্দিন বুদু মিয়া। তবে রুমা জঙ্গি হামলার ঘটনায় জড়িত না বলে তিনি মনে করেন। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করে তিনি বলেন, প্রকৃত অপরাধী হলে তাকে যথোপযুক্ত শাস্তি দেয়া হউক।
এইদিকে স্থানীয় গ্রামবাসী জানায়, স্বামীর সংসার হারানোর পর থেকে রুমা অস্বাভাবিক আচরণ করে। ইতিমধ্যে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছে।
উল্লেখ্য : গত ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারিতে হামলার ঘটনায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। এছাড়া জঙ্গিদের গ্রেনেডে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়। এসময় আহত হয় অন্তত ৩০ জন।