Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

48খোলা বাজার২৪, রোববার, ২৪ জুলাই ২০১৬: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাচনে অযোগ্য করতেই ‘ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ তাকে অর্থপাচারের মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ভবিষ্যতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাদেরকেও এভাবে ‘মিথ্যা মামলায়’সাজা দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অর্থপাচারের মামলায় তারেক রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে এর আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অর্থপাচারের মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সেজন্য নিম্ন আদালত থেকে খালাস পাওয়া মামলায় সরকার দুদককে (দুর্নীতি দমন কমিশন) দিয়ে আপিল করিয়েছে।’এই রায়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি আশা ব্যক্ত করেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তাকে (তারেক রহমান) জেলে নিয়ে যাবেন, আর আমরা জনগণ চিনাবাদাম খাব? বায়ান্নো, উনসত্তর, একাত্তর, নব্বইয়ে প্রতিবাদের মাধ্যমে এ দেশের মানুষ কোনো ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়নি। আন্দোলন করে তাদের অধিকার আদায় করেছে। এবারও কোনো ষড়যন্ত্র জনগণ সফল হতে দেবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সারা দেশ যখন জঙ্গিবাদের আতঙ্কে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাকে সবাই সাড়া দিচ্ছে; তখনই জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হলো। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে সরকার জঙ্গিবাদকেই প্রশ্রয় দিচ্ছে।
জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের গ্রেপ্তার অভিযানের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘১৬ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে ১৫ হাজারই সাধারণ মানুষ। এতো নিরীহ মানুষ গ্রেপ্তার কেন? অনেকে বলেন, পুলিশের বাণিজ্য। কিন্তু শুধু বাণিজ্যের জন্য নয়, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য যে আন্দোলন চলছে সেটিকে নস্যাৎ করে দেওয়াই মুল উদ্দেশ্য।’
নতুন করে আবারো গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়েছে, দাবি করে তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিঃশেষ করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ধ্বংস করতে কাজ করছে সরকার। বিরোধী রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করে গণতন্ত্রের মোড়কে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায় সরকার।’
জঙ্গিবাদের উত্থানে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে, দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানানোর পরিকল্পনা হচ্ছে। এর সঙ্গে মিলে সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করছে।
বিএনপি নেতাদের মামলায় দ্রুত সাজা দেওয়ার জন্য সরকার তিনটি দ্রুত বিচার আইনের ট্রাইব্যুনাল করেছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে আমরা অবশ্যই বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চাই। কিন্তু স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপোশ নেই। প্রয়োজনে আবারো মানুষ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেবে।’
তারেক রহমানকে সাজা দেওয়ার মাধ্যমে ক্ষমতাসীনরা বিএনপির বুকের মধ্যে হাত দিয়েছে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘সরকারের এই অপশাসন থেকে দেশকে রক্ষা করতে নেতা-কর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক দ্বিধা-বিভেদ ভুলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।’
ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।