খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০১৬: মোঃ আফজাল হোসেন, দিনাজপুর : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অফিস কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালন শেষ উপলক্ষে মূল্যায়ন ও সমাপনী অনুষ্ঠান। গতকাল ২৫শে জুলাই সোমবার ফুলবাড়ী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অফিস কক্ষে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালন শেষ উপলক্ষে মূল্যায়ন ও সমাপনী অনুষ্ঠান সকাল সাড়ে ১১টায় মৎস্য কর্মকর্তা মোছাঃ নাজনুন্নাহার মায়া এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত করেন ক্ষেত্রসহকারী মোঃ আমিনুল ইসলাম। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রউফ, উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুম্মান আক্তার, উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোঃ মহসীন আলী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সুপারভাইজার মোঃ আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী থানা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ মেহেদী হাসান উজ্জল, স্থানীয় মৎস্য স¤প্রসারণ প্রতিনিধি (লিফ) এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে জব্দকৃত অবৈধ কারেন্ট জাল আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সংবাদের সাথে ছবি আছে
তিন কুলে যার কেউ নেই \ সেই প্রবীণের যে অবস্থা \
মোঃ আফজাল হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি
জীবন সংসার! জীবন সংসারে যার তিন কুলে কেউ নেই। বয়সের ভারেও ন্যুজ হয়ে পড়েছে; চোখেও দেখতে পান না পুরোপুরি। একটা চোখ অপারেশনের মাধ্যমে ভাল হলেও, অন্যটা দিয়ে কিছইু দেখতে পান না। ভিক্ষাবৃত্তি আর দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন রকমে জীবন জীবিকা চলে প্রবীণ নিলুফার (৭৫)। মাথা গুজার ঠাঁই নেই, তাই অন্যের বাড়ীর খড়কুটের ঘরেই থাকেন তিনি। একদিকে জঠর জ্বালা অন্যদিকে চোখের দুশ্চিন্তায় দু’চোখের নিভু নিভু আলো যেন অন্ধকার।
দেশ স্বাধীনের পূর্বে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার কাঁটাবাড়ী গ্রামের জনৈক আজিমুদ্দিন এর সাথে বিয়ে হয় নিলুফার। দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে আজিমুদ্দিনের ঘরে আসলেও তার কোন সন্তান হয়নি। একমাত্র অবলম্বন তার স্বামী কিছু দিন পর মারা যান। প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও তার ঘরের ২ সন্তান, নিলুফারকে এক প্রকার অবস্থান হারা করে দেন। তিনি হয়ে পড়েন সহায় সম্বল হীন । বেরিয়ে পড়েন আশ্রয়ের সন্ধানে। তার অসহায়ত্ব এবং নিঃসঙ্গ জীবনে মাথা গোজার ঠাঁই হয় ফুলবাড়ীর পশ্চিম গৌরিপাড়ার জনৈক রহিমদ্দিনের বাড়ি। মাথা গোজার ঠাঁই হলেও জঠর জ্বালা নিবারণের থাকে না কোন পথ। তাই বিভিন্ন বাসা বাড়িতে প্রায় ৭ বছর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন আর কুলাতে পারেন না বয়সের ভারে। তাই ভিক্ষের ঝুলিই সম্বল হয় তার।
নিজ অন্ন জোগাতে প্রতিদিনই রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বেরুতে হয় ভিক্ষের ঝোলা নিয়ে। ২/৪ বাড়ী ঘুরতে না ঘুরতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন প্রবীণ নীলুফার। অর্ধপুষ্ট শরীর এরই মধ্যে জরা প্রতিটি অঙ্গে। শরীরের অন্য সমস্যার পাশাপাশি দু’চোখে ছানি পড়ে কিছুই দেখতে পেতেন না। ২০১৫ সালে একটি বেসরকারী সংস্থার বিনা মূল্যে চুক্ষু চিকিৎসা ও চোখের অপারেশনের মাধ্যমে ভাল হলেও আবারও ছানি পড়ে গেছে তার দু’টি চোখেই। একে তো দু’চোখে ছানি তারওপর চোখে একটু বাতাস লাগলেই দু’চোখ দিয়ে ঝড়তে থাকে পানি।
চোখ আর জঠর সাথে ন্যুয়ে পড়া বার্ধক্য যেন নীলুফার জীবনকে পদে পদে পিষ্ট করছে বাঁচার আশাকে। তার অসমাপ্ত অসহায়ত্ব, ক্লান্তি, রোগ-শোক, আর অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের অসহনীয় কষ্ট তার আক্ষেপ’কে ক্ষনে ক্ষনে বাড়িয়ে দেয় তাই সে বলে এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলে খুব ভাল হতো।