খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০১৬: বাগেরহাট : সুন্দরবনের নিষিদ্ধ খালগুলোতে অবাধে চলছে মাছ শিকারের মহাৎসব। কতিপয় অসাধু বন কর্মকর্তার যোগসাজসে জেলেরা সেখানে গিয়ে মাছ ধরায় মাছের সুন্দরবনের নিষিদ্ধ খালে চলছে মাছ শিকারের মহাৎসব প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংসের পাশাপাশি জীববৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। বিশেষ করে জোংড়া ও মরাপশুর ক্যাম্পের দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেলেদের কাছ থেকে মাসিক হারে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বনের নিষিদ্ধ খালে মাছ ধরার সুযোগ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে, সুন্দরবনের অভয়ারণ্যের মধ্যে থাকা ১৮টি খালে মাছ শিকারসহ সকল ধরণের বনজ ও জলজ সম্পদ আহরণে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু বন বিভাগের কিছু অসৎ কর্মকর্তা জেলেদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনি ময়ে তাদেরকে এই নিষিদ্ধ খালগুলোতে মাছ শিকারের সুযোগ করে দিয়ে থাকে। বনের নিষিদ্ধ ঝাপসি খালে চিলার সাবেক ইউপি মেম্বর জামালের ৬টি ঘাট রয়েছে। আর এ ঘাট বন বিভাগের কর্মকর্তাদের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করে এবং বিভিন্ন দস্যু বাহিনীর প্রভাব খাটিয়ে চলতি মৌসুমে জামাল ঘাটগুলো তার দখলে নেয়। এছাড়া মরাপশুর খালে আউয়াল, জিয়ার, জোংড়া খালে কামরুল, শাহাদাৎ ও নশের এবং আন্ধারিয়া খালের মাছ শিকার করে আসছে সিন্দুরতলার সামাদ। আন্ধারিয়া খালে জোংড়ার ওসির তত্বাবধায়নের মাছ ধরে থাকে সামাদ। সামাদ ওই খালে অবৈধভাবে মাছ ধরে যে টাকা পান তার অর্ধেক তিনি নেন আর বাকী টাকা জোংড়ার ওসিকে দেন বলে অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলে-মহাজনের। এছাড়া অন্যান্য জেলেরাও জোংড়া এবং মরাপশুর ক্যাম্পের ওসির সাথে মাসিক চুক্তিতে মাছ ধরে থাকেন। তবে জোংড়ার ওসি অতি অর্থের লোভের বশত এখন শুধু তার লোকজন দিয়েই বিশেষ করে সামাদকে দিয়ে মাছ শিকার করাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয় রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদেরও। এছাড়া জোংড়ার ওসি মোবারক চিলার জয়মনি এলাকার সাবেক ইউপি মেম্বর ইউনুসের জামাই হওয়াতে স্থানীয়ভাবে একটু বেশি দাপট খাটিয়ে চলছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে জোংড়া ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: মোবারক হোসেন বলেন, তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত এ সব অভিযোগ সঠিক নয়। এর আগে সুন্দরবনের অভ্যন্তরের খালে অবৈধ জাল নৌকা থাকলেও এখন তা নেই বলে তিনি দাবী করেন। তিনি আরো বলেন, যখন কারো স্বার্থে বেঘাত ঘটে তখন তারা এভাবে মিথ্যা অভিযোগ ছড়িয়ে থাকেন। নিষিদ্ধ খালে মাছ শিকারের বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি রবিবার সারাদিন ওই এলাকাগুলোতে ছিলাম। এ বিষয়ে আমরা খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছি, আমাদের চোখ ফাকি দিয়ে কেউই নিষিদ্ধ খালে মাছ শিকার ও অবৈধ কোন কাজ করতে পারবে না। কেউ যদি এ সব করার চেষ্টা করে তাহলে তাদেরকে ধরে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।