খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই ২০১৬: কল্যাণপুরে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ নিহত হওয়া ৯ জন সত্যিই অপরাধী কি না-তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব.) আ স ম হান্নান শাহ।
তিনি বলেন, ‘কল্যাণপুরে আজ (মঙ্গলবার) সকালে পুলিশের অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। আমরা সন্দেহ করছি, এতে নিরীহ মানুষ মারা গেছেন।
কেন সন্দেহ করছি?-এমন প্রশ্ন করে হান্নান শাহ বলেন, ‘গুলশানের ঘটনায় দেখা গেল শত শত পুলিশ ছিল, ৫-৭ জঙ্গি ছিল। কিন্তু পুলিশ সেই সশস্ত্র জঙ্গিকে মোকাবিলা করতে যায়নি। সুতরাং ওনারা (পুলিশ) যখনই বন্দুকযুদ্ধের কথা বলেন তখনই মানুষের মনে সন্দেহ দেখা দেয়। নিহতরা কী সত্যিই অপরাধী ছিল, না নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হলো?’
রাজধানীর ফটো জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই)এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ন্যাপ-ভাসানীর ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এ রায়, এর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ, জঙ্গিবাদ দমনে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বর্তমান ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগের বিকল্প নেই’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর কল্যাণপুরে জাহাজ বিল্ডিং নামে একটি ভবনের ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, এ অভিযানে ৯ ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন।
আলোচনা সভায় হান্নান শাহ বলেন, ‘বহু ঘটনা আছে এই সরকারের নিদের্শে হয়েছে। এমনিতে কোনো ঘটনা ঘটে না। আমি সেনাবাহিনীতে ছিলাম। আমি জানি, কারো না করো হুকুমে এসব ঘটনা হয়। যখন এ দেশে আইনের শাসন আসবে, জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষমতায় আসবে প্রত্যেকটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। এসব হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতা হিসেবে কার নাম সবার প্রথমে আসবে তা আপনারা সবাই জানেন, আমিও জানি।’
তিনি আরও বলেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন ‘সংসদ সদস্যারা টিআর-কাবিখার টাকা চুরি করেছেন’। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ওনি ভাল মানুষ। আর সবাইকে চোর বানিয়েছেন।’ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তো বলছেন না-তার দলে চোর নেই।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে হান্নান শাহ বলেন, ‘আপনি আপনার বাবা শেখ মুজিবের কথা মনে করেন। আপনার বাবা বলেছিলেন, ‘সবাই পায় তেলের খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি’। আপনি (শেখ হাসিনা) ইনুর কথা পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছেন। আপনার দলের সবাই খেয়েছেন। খাওয়া আপনাদের পুরানো অভ্যাস। আর দোষ দেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আইনে আছে অর্থপাচার মামলায় কাউকে সাজা দিতে হলে অর্থ এদেশ (বাংলাদেশ) থেকে যেতে হবে। কিন্তু টাকা তো এদেশ থেকে যায় নাই। ঘটনা ঘটেছে সিঙ্গাপুরে। মামলা করলে তারা করতে পারে। এ দেশের সরকার মামলা করতে পারে না।’
ন্যাপ-ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন-বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, মুসলিম লীগের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার আলী, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব এম এ কাশেম, ন্যাপ-ভাসানীর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব গোলাম মোস্তফা আকন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।