খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০১৬: থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশিদের মধ্যে ২ জনের সঙ্গে কথা বলবে দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গার্ডিয়ানের রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করেই তারা এই ব্যাপারে কাজ শুরু করে। ডিটেনশন সেন্টারে থাকা ইমিগ্রেন্টদের উপর নির্যাতন প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। গত বছর যে ২৭ জন বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে ৫ জনের সাক্ষাতকার প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান পত্রিকা। সেই সাক্ষাতকারে তারা বর্ণনা করেছেন তাদের উপর কী ধরনের নির্যাতন করা হয়েছে। এই কারণে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো ২ জনের সাথে সরাসরি কথা বলবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কর্মকর্তা ড্যানিয়েল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটের ডিপোর্টেশনে থাকা ৪৫ জন বাংলাদেশীকে গত ২৫ জুলাই সকালে ডিপোর্ট করে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নিজস্ব বিমানে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এর আগে এত বাংলাদেশীকে ডিপোর্ট করার নজির নেই। ২০১৫ সালে ৮৫ জন ডিটেনীদের ডিপোর্ট করে নিজ নেজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার সময় ২৭ জন বাংলাদেশীকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিলো। এবার যাদের পাঠানো হয়েছে তারা ২৬ জুলাই রাতে বাংলাদেশে পৌঁছেছে।
নিউইয়র্ক থেকে এনা জানায়, ড্রামের এক্সজিবিউটিভ ডিরেক্টর ফাহাদ আলম ও আর্গানাইজিং ডিরেক্টর কাজী ফৌজিয়া জানান, গত ২৪ জুলাই সকাল সাড়ে ৫টায় অন্যান্য দেশের সাথে ৪৫ জন বাংলাদেশীকে ডিপোর্ট করে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের ডিপোর্ট করা হয়েছে তাদের সকলেরই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন রয়েছে। আবেদন থাকা সত্ত্বেও তাদের ডিপোর্ট করা হয়েছে। এমন কি মাহবুবুর রহমান নামের একজন বাংলাদেশীর পক্ষে কোর্টে স্টে অর্ডারও রয়েছে। সেই স্টে অর্ডারকে অমান্য করে ৪৫ জনের সাথে মাহবুবুর রহমানকেও ডিপোর্ট করে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
২০১৫ সালে আমেরিকার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আলোচিত আমরণ অনশনের নেতেৃত্ব ছিলেন এই মাহবুবুর রহমান। জানা গেছে, এদেরকে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার থেকে লুজিয়ানার আলেকজান্ডিয়া ডিটেনশন সেন্টারে আনা হয় এবং সকলকে এক সাথে ডিপোর্ট করা হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছেন যারা গত বছর আমেরিকার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আমরণ অনশন করেছিলেন।
এদেরকে দেশে পাঠানোর উদ্যোগে বাধা দিয়েছিলেন তাদের আইনজীবী, ড্রামসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। কিন্তু ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট অথরিটি কারো কথাই কর্ণপাত করেনি। এমন কি মাহবুবুর রহমানের পক্ষে তিন জন কংগ্রেসম্যান ফোন করেছিলেন ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস ইনফোর্সমেন্ট অথরিটিকে। কংগ্রেসম্যানরা অনুরোধ করেছিলেন মাহবুবুর রহমানের ব্যাপারে কোর্টের স্টে অর্ডার রয়েছে। সুতরাং তাকে বিমান থেকে নামানো হোক। কিন্তু তা মানা হয়নি।
কাজী ফৌজিয়া বলেন, যেহেতু মাহবুবের স্টে অর্ডার আছে, আমরা এখন চেষ্টা করছি তাকে যেন ফেরত বিমানে নিয়ে আসার। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো আমেরিকার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে প্রায় ২ হাজারের মত বাংলাদেশী রয়েছেন। প্রতিদিনই সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশীরা উন্নত জীবনের আশায় আমেরিকায় আসছেন এবং ধরা পড়ে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন। তাদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এদের নির্যাতনের খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় আসছে।