খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই ২০১৬: লেখক ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার কলকাতায় ৯০ বছর বয়সে তিনি মারা যান। গদ ২৩ জুলাই তিনি গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এই লেখক সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, পদ্মভূষণ, জ্ঞানপীঠ, ম্যাগসাসাই, সার্ক সাহিত্য পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার পেয়েছেন।
পিটিআই জানিয়েছে, কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকে গত ২ মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন মহাশ্বেতা। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বার্ধক্যকালীন অসুস্থতা নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে এবং রক্তে সংক্রমণ ও কিডনি বিকল হয়ে পড়ে।
তার গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো হলো- হাজার চুরাশির মা, অরণ্যের অধিকার, চোট্টি মুণ্ডা ও তার তীর প্রভৃতি।
তার বেশ কিছু কাহিনি সিনেমায় রূপান্তর হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জীবন উঠে এসেছে তার লেখায়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকেন্দ্রিক কাহিনি রচনায় তার সফলতা অনন্য ও অনস্বীকার্য।
মহাশ্বেতা দেবী ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মনীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক এবং তার কাকা ছিলেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটক।
মহাশ্বেতা দেবী শিক্ষালাভের জন্য শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৬৪ সালে তিনি বিজয়গড় কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। এই সময়েই তিনি একজন সাংবাদিক এবং লেখিকা হিসাবে কাজ করেন। পরবর্তীকালে তিনি বিখ্যাত হন মূলত পশ্চিমবাংলার উপজাতি এবং নারীদের ওপর তার কাজের জন্য। তিনি বিভিন্ন লেখার মাধ্যমে বিভিন্ন উপজাতি এবং মেয়েদের উপর শোষণ এবং বঞ্চনার কথা তুলে ধরেছেন।
সাম্প্রতিক কালে মহাশ্বেতা দেবী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পনীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সরকার কর্তৃক বিপুল পরিমাণে কৃষিজমি অধিগ্রহণ এবং স্বল্পমূল্যে তা শিল্পপতিদের কাছে বিতরণের নীতির তিনি কড়া সমালোচক।এছাড়া তিনি শান্তিনিকেতনে প্রোমোটারি ব্যবসার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেছেন।
গণনাট্য কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক বিজন ভট্টাচার্য তার স্বামী ও সাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য তার ছেলে।