খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬: আর উত্তর পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রধান নদ নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ডুবেছে বসতবাড়ি, ফসলের মাঠ। অনাহারে অর্ধাহরে মানবেতর জীবন যাপন করছে পানিবন্দী মানুষ। বন্যা হানা দিয়েছে মূলত দারিদ্রপীড়িত অঞ্চলে। ফলে কবে দুর্যোগের অবসান হবে, কবে পানি কমবে নদীতে-অপেক্ষায় দুর্গতরা।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ তাদের জন্য কোনো সুখবর দিচ্ছে না তাদেরকে। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে-বলছে তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধির প্রবণতা আর উজানে ভারতে বৃষ্টিপাতের যে পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দীর্ঘমেয়াদী ও বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন তার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সাধারণত আগস্ট- সেপ্টেম্বর মাসেই বেশি বন্যা হয়। সে হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে এবারও পরিস্থিতি সেরকম হতে পারে। তবে সবকিছুই অনুমাননির্ভর।’
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপাত্ত বলছে, দেশে প্রধান নদ নদীর বেশিরভাগই এখন বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। বিভিন্ন জায়গায় বাধের উপর আশ্রয় নিয়েছে পানিবন্দী মানুষ। ভাঙনের কারণে নদীতে বিলীন হয়েছে সহস্রাধিক পরিবারের ভিটেমাটি।
বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের সঙ্কট বেড়েই চলেছে। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তীব্র স্রোতে ব্যাহত জচ্ছে ফেরি চলাচল।
বন্যাকবলিত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, সুনামগঞ্জ, পঞ্চগড়, ফরিদপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ।
ফরিদপুরের ১১টি ইউনিয়নের ১৫ হাজার পরিবার, লালমনিরহাটের ২৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার পরিবার, সিরাজগঞ্জের ৩১টি ইউনিয়নের সাড়ে ৭ হাজার পরিবার, বগুড়ার ৮৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার, মুন্সীগঞ্জে কয়েক হাজার পরিবার, নীলফামারীর ১৫ হাজার পরিবার, জামালপুরের ৪০টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ, গাইবান্ধার ২২টি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামের ২০ হাজার পরিবারের ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ, কুড়িগ্রামের ৫৬টি ইউনিয়নের ৭১৯টি গ্রামের সোয়া ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।