Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

33খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬: একরামুল হক স¤্রাট,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ঃ তারিখ-৩০.০৭.১৬ইং
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। দুর্ভোগ কমেনি জেলার ৯ উপজেলার ৬ লক্ষাধিক বানভাসীর। সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের সাথী ও নাগেশ্বরী উপজেলার হাছনাবাদ ইউনিয়নের খাদিজা এবং চিলমারীর অষ্টমীর চরের আব্দুস সামাদের দেড় বছরের কন্যা শিল্পী পানিতে ডুবে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৩দিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭জনের সলিল সমাধি হল।মৃতদের সম্বন্ধে এলাকাবাসীরা জানায়, পাঁচগাছী ইউনিয়নের কলেজ-পাড়া গ্রামের সাথী (৮) নামের এই শিশু কলা গাছের ভেলা থেকে নিখোঁজ হয়। শনিবার সকালে তার মৃতদেহ পানির ওপর ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। অন্যদিকে নাগেশ্বরী উপজেলার হাছনাবাদে সোলায়মান আলীর কন্যা খাদিজা (১৮) শনিবার সকালে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদিকে চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জে একটি সংযোগ সড়কের ৩০ মিটার ভেঙ্গে পানির ¯্রােতে ৪ টি বাড়ী ভেসে গেছে। নতুন করে তলিয়ে গেছে ৫টি গ্রাম। দুর্ভোগ বেড়েছে বাঁধ ও উচু স্থানে আশ্রয় নেয়া বন্যা দুর্গতদের। বাঁধ ও পাকা সড়কে আশ্রিতরা জানান, খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি, গবাদি পশুর খাবারসহ টয়লেটের সংকটে পড়েছেন তারা। নিজেরা একবেলা খেয়ে দিন পার করলেও গাবাদি পশুদের গাছ ও বাঁশের পাতা খাইয়ে দিন পার করছেন বলে জানান দুর্গতরা।সদরের শুলকুর বাজার এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রন বাধে আশ্রয় নেয়া আমেনা জানান, পলিথিন দিয়ে কোন রকমে ধাপড়ী ঘর তৈরি করে তার অসুস্থ স্বামীসহ পরিবারের ৯ সদস্যসহ গাদাগাদি করে আছেন। ঘরের খাবার তো নাই। বিশেষ করে টয়লেট না থাকায় বাঁধে আশ্রয় নেয়া সব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।জেলায় বন্যার্তদের জন্য ৮৫ টি মেডিকেল টিম কাজ করলেও তাদের দেখা মিলছে নাদেখা না পাওয়ার অভিযোগ দুর্গতদের। জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান,বন্যা দুর্গতের মাঝে এ পর্যন্ত ৫শ ৭৫ মেট্রিক টন চাউল ও সাড়ে ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা ইতোমধ্যেই বিতরন করা হয়েছে। নতুন করে আরো ৫শ মেট্রিক টন চাউল ও ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা বিতরনের কাজ চলছে। সরকারী ভাবে জেলায় ৫৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ৬শ ৮৪ জন বন্যা দুর্গত মানুষ।সরকারী ত্রান তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও ৬ লক্ষাধিক বানভাসীর অনেকের মধ্যে তা পৌছায়নি। সরকারের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বল্প পরিসরে ত্রান প্রদান শুরু করেছে। এছাড়া শুক্রবার বিকেলে ভুরুঙ্গামারীতে দুর্যোগ ও ত্রান মন্ত্রনালয়েন যুগ্ন সচিব ডঃ মোঃ আতিকুর রহমান ও দুর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা পরিচালক উপজেলার বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শন করেন । তিনি উপজেলার বন্যার্ত এলাকা এবং ত্রান বিতরণ কার্যক্রম পরিদর্শন করে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।এতে বক্তব্যে তিনি বলেন বন্যা মোকাবেলায় সরকারের পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী রয়েছে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন। অন্যদিকে,শনিবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সরকারী উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের ১৯৯৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ব্যাক্তি উদ্যোগে সদর উপজেলার বিভিন্ন চরের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরন করেন। বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকায় এক সপ্তাহ ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে জেলার ২ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।