খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬: ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চার বছরে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ৯৯২ জন ব্যক্তি পাচার হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়ার্টাসের হিউম্যান ট্রাফিকিং মনিটরিং সেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আর পাচার হওয়াদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৪৫০ জন। যা চার বছরে মোট পাচার হওয়া মানুষের ৭৪ শতাংশ। এই সময়ে ১ হাজার জন নারী পাচারের শিকার হয়েছে। পাচার হওয়াদের মধ্যে ১৭ শতাংশ। আর গত চার বছরে ৫৪২ জন শিশু পাচার হয়েছে। এতে পাচার হওয়াদের মধ্যে ৯ শতাংশ শিশু রয়েছে।
আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিশ্ব মানব পাচারবিরোধী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের হিউম্যান ট্রাফিকিং মনিটরিং সেলের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ২০১২ সালে মানব পাচারবিষয়ক আইন হওয়ার পর চার বছরে (২০১৫ সাল পর্যন্ত ) ২ হাজার ৪২৯ জন মনুষ পাচার হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১২ সালে ৩৪২ জন, ২০১৩ সালে ৩৭৭ জন, ২০১৪ সালে ৬৮২ জন ও ২০১৫ সালে ১ হাজার ২৮ জন।
মানব পাচার ও তা থেকে মানুষকে রক্ষা নিয়ে বিভিন্ন মতামত আলোচনা সভায় বক্তারা তুলে ধরেন। এ বিষয়ে আইন করা হলেও তার যথাযথ বাস্তবায়ন না থাকাকে মানব পাচারের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মানব পাচারের বিষয়ে অনেক মামলা হলেও তার তদন্তের অভাবে মানব পাচার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। আলোচনা সভা থেকে মানব পাচার রোধে কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করারও দাবি করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ওমর ফারুক। তিনি বলেন, ‘প্রায় গত ১০ বছর ধরে মানব পাচার নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। এই জঘন্যতম বিষয়টি জাতির জন্য লজ্জাকর। মানব পাচার রোধে শুধু সচেতনতা দিয়ে কাজ হবে না, আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
এছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম। আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিলা ও শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ইসরাত শামিম। বিশ্ব মানব পাচারবিরোধী দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ইউএসএইড বাংলাদেশ, ব্র্যাক, জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, বিএনডব্লিউএলএ, ওকাফসহ ১৫টি সংগঠন।
উল্লেখ্য, গত ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতিবছর ৩০ জুলাই দিনটিকে বিশ্ব মানব পাচারবিরোধী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।