খোলা বাজার২৪, রোববার, ৩১ জুলাই ২০১৬: পদ-পদবি, চাঁদার টাকা ভাগাভাগিসহ নানা কারণে খুনোখুনিতে জড়িয়ে পড়ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খুন আতঙ্কে ভুগছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কখন কে কোথায় কীভাবে আক্রান্ত হন সে আশঙ্কায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে তারা। রাজধানীসহ সারাদেশের চিত্র প্রায় একই। এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ ও আধিপত্য বিস্তার।
গত ১ জুলাই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারিতে মংশৈলু মারমা (৫৬) নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মংশৈলু মারমা বাইশারি ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। পরিবারের সন্দেহ, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
বাইশারি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, মংশৈলু মারমাকে রাত সাড়ে ৯টার দিকেও বাইশারি বাজারে দেখা গিয়েছিল। তিনি বাইশারি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হলেও সকলের সঙ্গে মিশতেন এবং একজনের সঙ্গে কিছু ভূমি বিরোধ ছাড়া কারও সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল না।
মংশৈলুর বড় ভাই উথোয়াইহ্লা মারমার বরাত দিয়ে এসআই আনিসুর রহমান আরও বলেন, উথোয়াইহ্লারও সন্দেহ ভূমি বিরোধে তাঁর ছোট ভাইকে খুন করা হতে পারে। কয়েক দিন আগেও মংশৈলু মারমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
গত ২ জুলাই ফরিদপুরের নগরকান্দায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তিহারউদ্দিন মাতুব্বরকে (৬০) গুলি করে এবং কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের বিনোকদিয়া বাজারের কাছে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ সময় তিহারউদ্দিন মাতুব্বরের ভাই নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য সাহিদ মাতুব্বরকেও কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। নিহত তিহারউদ্দিন মাতুব্বর সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং গট্রি ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ফিরোজ খানের আওয়ামী লীগে যোগদান এবং সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে যান তারা। পরে রাত ৯টার দিকে তিহারউদ্দিন মাতুব্বর ও শাহিদ মাতুব্বর নিজ বাড়ি সালথা উপজেলার গোট্রি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে বিনোকদিয়া নামক স্থানে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা তিহারউদ্দিন মাতুব্বরকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
৩ জুলাই ঝালকাঠির নলছিটিতে সজল হাওলাদার (১৮) নামের এক ছাত্রলীগকর্মীকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। উপজেলার মালুহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত কক্ষে নিয়ে তাঁকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত সজল মোল্লারহাট জেড এ ভূট্টো ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে বরিশাল বিএম কলেজে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি পশ্চিম কামদেবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম তুজাহার হাওলাদারের ছেলে। মোল্লারহাট ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন সজল।
৩ জুলাই মাত্র ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে কক্সবাজারে হত্যা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে। তাদের কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এদের একজন হচ্ছেন মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এক সময়ের আলোচিত জলদস্যু সম্রাট আবদুল গফুর ওরফে নাগু মেম্বার (৬৫) এবং অন্যজন হচ্ছেন টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম (৬৮)।
মহেশখালী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল চন্দ্র বণিক জানান, সন্ত্রাসিরা নাগু মেম্বারের উপর হামলা চালায় এবং রাত ১১টায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে। স্থানীয় একাধিক সূত্র মতে, নিহত নাগু মেম্বারের আপন ভাতিজা সরওয়ার প্রকাশ বতৈল্যার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার উপর হামলা চালায়। গুলি করার পর তাকে উপর্যুপরি কোপানো হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় আত্মীয় স্বজনেরা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয় এবং সেখানেই নাগু মেম্বার মারা যান।
নাগু মেম্বারের চাচাতো ভাই জাফর আলম জানান, নাগু মেম্বার রোববার তারাবি নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে একটু যেতেই পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে উপর্যুপরি কোপানো হয়।
অপরদিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সিরাজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করেছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার।
সদর ইউনিয়নের পল্লান পাড়ায় তিন রাস্তার মাথা এলাকায় বাড়িতে ঢুকে সন্ত্রাসীরা সিরাজুল ইসলামকে গুলি করে। আহতকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
৪ জুলাই, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাদিরা ইউনিয়নের গনিপুর গ্রামের আব্দুল আজিজ নামে এক আওয়ামী লীগকর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশী দুই ভাই। গোপালপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল জলিল জানান, রোপা আমন চারা ক্ষেতে গরু যাওয়ার ঘটনায় কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল আজিজকে একই গ্রামের আজগর আলী ও তার ভাই জুলহাস উদ্দীন মারপিট করে। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পর গ্রামবাসী ওই দুই ভাই আজগর ও জুলহাসকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
৪ জুলাই যশোরের ঝিকরগাছায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে হাসান আলী (৪৮) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। ঘটনার দিন ভোররাতে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। হাসান ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি মঠবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোল্লা খবির আহমেদ জানান, ভোররাতে দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগ কর্মী হাসানের বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে তুলে গুলি করে। ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় বিরোধের জের ধরে হাসান আলী নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে। নিহত হাসান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রবিউল হত্যাসহ একাধিক হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
৮ জুলাই মাগুরার শালিখা উপজেলায় জলিল মোল্লা (৫০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। উপজেলার চটকাবাড়ীয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জলিল মোল্লা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নটুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর মোল্লার ছেলে। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রতিপক্ষের লোকজন রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জলিল মোল্লাকে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
৮ জুলাই রাজধানীর সূত্রাপুর ও মাগুরার শালিখা আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রাজধানীর সূত্রাপুর থানার ধোলাইখালের রোকনপুরে রাজীব হাসান (৩৮) নামের এক যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। পরিবার পরিজন জানিয়েছেন, রাজীব হাসান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-অর্থ সম্পাদক ছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে গুলিবিদ্ধ রাজীব হাসানকে সেখানে নেয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাজীবের মাথায় তিনটি গুলির ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে। সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন কুমার বলেন, রোকনপুরের সড়কে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজীব পড়ে ছিলেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, মাগুরার শালিখা উপজেলায় জলিল মোল্লা (৫০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার চটকাবাড়ীয়া এলাকায় প্রতিপক্ষের লোকজন রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে দিয়ে কুপিয়ে জলিল মোল্লাকে গুরুতর জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
৯ জুলাই ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় জলিল মোল্লা (৫০) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে দলীয় প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা তাকে লোহার রড ও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত জলিল মিয়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাটোপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর মোল্লার ছেলে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
১০ জুলাই, বাসা ভাড়া নিয়ে বিরোধের জের ধরে সিলেট স্বেচ্ছাসেবক লীগের আব্দুল্লা অন্তর (২২) নামে এক কর্মীকে খুন করা হয়েছে। সদর উপজেলার তারাপুর চা বাগানের কাছে গোয়াবাড়ি নেহার মঞ্জিলে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সিলেট মহানগরীর জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী সানির মালিকানাধীন নেহার মঞ্জিলে ভাড়াটিয়া হিসাবে থাকতেন অন্তর। ভাড়া নিয়ে বিরোধের কারণে গতকাল সানির নেতৃত্বে অন্তরের উপর হামলা চালায় তেলীহাওর গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীরা। একপর্যায়ে অন্তরকে ছুরিকাহত করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত অন্তর সিলেট সিটি করপোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আপ্তব হোসেনের সমর্থক ছিলেন।
২০ জুলাই শরীয়তপুরের নড়িয়ার জবসা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান শওকত আলীর লোকজন জাকির হোসেন হাওলাদার নামে আওয়ামী লীগেরই অপর গ্রুপের কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার দিন বুধবার রাত ১১ টার দিকে জবসা ইউনিয়নের চরভোজেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাকিরের বাবা ফয়জুল হাওলাদার বলেন, রাতে শওকত আলী চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় জাকির ঘর থেকে বাইরে বের হলে তারা তাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে প্রথমে তাকে শরীয়ত সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা খারাপ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢামেকে তার মৃত্যু হয়।
২২ জুলাই, পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আমিন উদ্দিন (২৬) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে দূর্বৃত্তরা। ঘটনার দিন রাত দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আমিন পাবনা পৌর সদরের দোহারপাড়া এলাকার বাবলু হোসেনের ছেলে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রাত দশটার দিকে বাস টার্মিনাল এলাকায় আমিনকে কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারা, কি কারণে তাকে হত্যা করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বাস টার্মিনালের আধিপত্য বিস্তার ও আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে নিজ দলীয় লোকজন এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা। নিহত আমিন পাবনা পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন বলে জানায় দলীয় নেতাকর্মীরা।
২৪ জুলাই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবলীগকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। নিহত লিটন পন্ডিত (৩৫) মঠবাড়িয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আমির হোসেনের পুত্র। তিনি মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহ সম্পাদক আশ্রাফুর রহমান পক্ষের লোক বলে পরিচিত।
৩০ জুলাই, পূর্ব বিরোধের জের ধরে নাটোরের লালপুরে আব্বাস আলী (৩৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। এসময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জমির উদ্দিন নামের অপর একজন আহত হয়েছে। আহত জমির উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য বমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার এবি ইউনিয়নের বরমহাটি এলাকায় এঘটনা ঘটে।
আহত অবস্থায় আব্বাস আলীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত আব্বাস আলী এবি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও মৃত বলাই উদ্দিন শেখের ছেলে। লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই আব্বাস আলী ও মিজান গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
এনিয়ে পূর্বে একাধিকবার এলাকায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার রাত ৮ টার দিকে উপজেলার এবি ইউনিয়নের বরমহাটি এলাকায় আব্বাস আলী ও তার সহযোগী জমির উদ্দিন বিশ্বাস দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। এসময় অর্তকিতভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে মিজান গ্রুপের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। এসময় আব্বাস আলী পালাতে গেলে তারা আব্বাসের হাতে ও পায়ে গুলি করে। ঘটনাটি দেখে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে মিজান গ্রুপের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে আহত অবস্থায় আব্বাস আলী ও জমির উদ্দিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে আব্বাস আলীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে আব্বাস আলী মারা যায়।