খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১ আগস্ট ২০১৬: হার কমানোর পরও গত অর্থবছরে সবমিলিয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ২৫ শতাংশ বেশি।
সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই উল্লম্ফনে সরকারের ঋণের বোঝা আরও বেড়েছে। ফলে সরকারকে এখন ঋণ পরিশোধে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতির গবেষক জায়েদ বখত।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সবমিলিয়ে ৫৩ হাজার ১১০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
এ থেকে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ এবং মেয়াদ পূর্তির পর আসল শোধ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪২২ কোটি টাকা।
এ হিসাবে নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকার।
এই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকবে। প্রয়োজন পড়লে সরকার এই অর্থ খরচ করবে। সরকার এই টাকা খরচ করুক বা না করুক গ্রাহকদের সুদ বা মুনাফা দিতে হবে।
এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিক্রি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এই ঋণের বোঝা কমাতে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার গড়ে ২ শতাংশ করে কমানো হয়।
গত বছরের এপ্রিল মাসের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে প্রতি মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পেতেন একজন গ্রাহক। সুদের হার কমায় এখন পাচ্ছেন ৯১২ টাকা। তারপরও বিক্রি কমছে না।
এর ব্যাখ্যায় বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বি আইডিএস) গবেষণা পরিচালক জায়েদ বখত বলেন, “সাধারণ মানুষের বিনিয়োগের অন্য সব পথ প্রায় রুদ্ধ হয়ে গেছে বলা চলে। ব্যাংকে টাকা রাখলে ৬/৭ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। শেয়ার বাজারের অবস্থা তো দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
“তাই সুদ হার কমানোর পরও ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হারের চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্রের দিকেই ঝুঁকছে মানুষ।