খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১ আগস্ট ২০১৬: ইসলাম শাহীন ঃ ভুয়া নামে, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে, একই প্রকল্প একাধীকবার দেখিয়ে ১০ লাখ ৭৯ হাজার টাকা হাওয়া হয়ে গেছে ভূঞাপুরে গাবসারা ইউনিয়নের টি আর কাবিটা প্রকল্পের টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর সাধারণ) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা সাধারণ) কর্মসূচীর আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ দেখানো হয়েছে। বর্তমান সরকার পল্লীঞ্চালে আরো আধুনিকায়ন, যোগাযোগ ব্যাবস্থা সুদূঢ করা, অবহেলিত জনগোষ্টিকে আলোকিত করার জন্য সৌর বিদ্যুৎ স্থাপনসহ দেশ ও জাতী উন্নয়নে এ পকল্প ব্যাপক ভুমিকা রাখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সে আশার গুরেবালি।
সরেজমিনে ও পিআই অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের দ্বিতীয় পর্যায়ে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নে কাবিটা প্রকল্পে ভদ্রশিমুল গ্রামের আব্দুল বাছেদ, সেলিম উদ্দিন, আমীর আলী মাস্টার ও মোস্তফার বাড়ীতে সৌর বিদ্যুৎ স্থাপনের জন্য ২ মেট্রিক টন করে মোট ৮ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্দ দেখানো হয়। যার মূল্য ২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা এবং একই গ্রামের গোলাম মাওলার বাড়ী হতে সামছু মাস্টারের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত পরিতারে বিষয় তাদের বাড়ীতে সোলার আছে বটে কিন্তু কেউ কিনছে গরু-ছাগল বিক্রির টাকায় কেউ কিনেছে কিস্তিতে। তার অর্থ যে বাড়ীর চালে সোলার প্যানেল আছে তাদের নামই ব্যাবহার করে বিল উত্তোলণ করা হয়েছে। আর রাস্তা যেখানে দেখানো হয়েছে রাস্তা নির্মাণতো দুরের কথা পায়ে হাঁটার মেঠো পথও নেই ।
অন্যদিকে টিআর প্রকল্পে ইউনিয়নের কাশিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ৪০ হাজার, নিকলা উত্তর পাড়া জামে মসজিদের মাঠে মাটি ভরাট ৪০ হাজার, রাজাপুর কবরস্থান উন্নয়ন ৭০ হাজার, রুলীপাড়া ওয়াহিদ মন্ডলের বাড়ী পার্শ্বে রাস্তা সংস্কার ৫০ হাজার, খন্দকার পাড়া জামে মসজিদ মাঠে মাটি ভরাট ৫০ হাজার, কাশিহাটা পূর্ব জামে মসজিদে সোলার স্থাপন ৬০ হাজার, গোপালগঞ্জপাড়া জামে মসজিদে সোলার স্থাপন ৫০ হাজার, পুংলিপাড়া আলহাজের বাড়ীতে সোলার স্থাপন ৩০ হাজার, বিশ্বনাথপুর জামে মসজিদে সোলার স্থাপন ৫০ হাজার ও চরবিহারী দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদে সোলার স্থাপন ৬০ হাজার টাকা করে মোট ৫ লাখ টাকা বিল উত্তোলণ করা হয়। কিন্তু কোন প্রকল্পেই সোলার স্থাপন করেনি। যে সব সোলার আছে সেগুলো অনেক আগে এলাকাবাসী চাঁদা দিয়ে কিনেছে। সবগুলো সোলারের বয়স ২-৫ বছর। কিন্তু প্রকল্প দেখানো হয়েছে ২ মে ২০১৬। এমনকি যাদের নামে এসব বরাদ্দ দেখানো হয়ে তারা কিছুই জানেন না।
সোলার স্থাপনের বিষয়ে কথা হয় ভদ্রশিমুল গ্রামের সেলিম উদ্দিনের সাথে তিনি জানান, আমি প্রায় ৪ বছর আগে মাইসার ফাউন্ডেশন নামক সোলার বিক্রি কোম্পানি থেকে ৬৫ ওয়ার্ডের একটি সোলার কিস্তিতে কিনেছি। সরকারি সোলারতো দুরের কথা একটি বাল্বও কোন দিন পাইনি।
কথিত নামধারি আরেক সোলার স্থাপনকারি আমির আলী মাস্টার। তিনি বলেন, আমি সাড়ে ৩ বছর আগে নগদ ২৪ হাজার টাকা দিয়ে সোলার কিনেছি। আর আমার সোলার সরকারি রিলিপের ? লজ্জায় মরে যাই।
নিকলাপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি মোঃ আবেদ আলী জানান, গত ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে নামাজি মুসল্লিদের কাছ থেকে ৫-১০টাকা করে চাঁদা তুলে ৬ হাজার টাকার মাটি ভরাট করে মসজিদে কোন রকম নামাজের ব্যাবস্থা করেছি। বাবা আল্লার ঘর, যদি কোন সাহায্য পারেন তাইলে কইরেন। অত্যান্ত লজ্জার বিষয় সেই মাটি দেখিয়ে টিআর প্রকল্পে ৪০ হাজার টাকা বিল উত্তোলণ করেছে। সূত্র জানায় আরও জানায় এসব ভুয়া প্রকল্প তৈরীর নায়ক পিআইও অফিস সহকারি আব্দুল বারি।
পিআইও অফিসসহকারি আব্দুল বারী বলেন, আমি যা কিছু করি উপরের নির্দেশ ছাড়া করি না। প্রয়োজন হলে তাদের সাথে কথা বলেন।
গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির জানান, মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সে ফোন ধরেননি।