খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২ আগস্ট ২০১৬: , শেরপুর স্পেশাল :শেরপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়ার দোকান সংলগ্ন কজওয়ে। এর ফলে রবিবার সকাল থেকে জামালপুর, টাঙ্গাইলসহ উত্তরবঙ্গের সঙ্গে জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ওই সড়কে যাতায়াতকারী হাজারো যাত্রী চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়াও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়া চরাঞ্চলের চরপক্ষীমারী, চরমুচারিয়া, বেতমারি, ঘুঘুরাকান্দি, কামারেরচর ও বলাইচর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতন জীবন কাটাচ্ছেন। তালিয়ে গেছে আউশ ধান, সবজির আবাদ ও আমন বীজতলা। প্রতি মুহুর্তেই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার গোলাম মোস্তুফা জানান, শেরপুরের ব্রহ্মপুত্র সেতু পয়েন্টে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমা ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। শেরপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্তা চাকমা জানান, শেরপুর-জামালপুর সড়কের পোড়ার দোকান কজওয়ের উপর দিয়ে বিপদজনক ভাবে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সরাসরি যান চলাচল বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। পোড়ার দোকান এলাকায় কজওয়েতে এ সংক্রান্ত একটি সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডও স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। শেরপুরের অষ্টমিতলা টার্মিনাল ম্যানেজার মোঃ জয়নাল জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়ার দোকান কজওয়ে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, দশানি, মৃগীসহ জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ব্রহ্মপুত্র নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পুরনো ভাঙ্গা অংশগুলো দিয়ে প্রবল বেগে বন্যার পানি চরাঞ্চলে প্রবেশ করছে। এতে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী, লছমনপুর, বেতমারি-ঘুঘুরাকান্দি, কামারেরচর, চরমুচারিয়াসহ ৬ ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার কাঁচা রাস্তা-ঘাট, ফসল ও বিভিন্ন সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় শিশুদের নিরাপত্তার কারণে বিদ্যালয়গুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। শেরপুর সদরউপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, চরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। তবে তাৎক্ষনিক ভাবে ক্ষয়-ক্ষতির কোনো বিবরণ পাওয়া যায়নি ।