Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ০৪ আগস্ট ২০১৬: হাসান, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের পাট চাষীরা আবারো স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ফসলে লোকসান গুণতে গুণতে চাষীরা যখন ক্লান্ত ঠিক তখনি বাড়তি ফসল হিসেবে সোনালী আঁশ পাটকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পাট চাষীরা। পাট শিল্পের প্রতি উদাসীনতা অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে বছরের পর বছর পাটের বাজারের মন্দা অবস্থা চলছিল। এতে কৃষকরা পাট চাষ করে ক্রমাগত লোকসান খাচ্ছিল। কিন্তু গত ২/১ বছর ধরে পাটের দাম ভালো হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকেরা আবারও পাট চাষে ঝুকেছে। চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে পাট কাটা, জাগ দেয়া ও পাটকাঠি থেকে পাট ছাড়ানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষাণ-কৃষাণীরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার পাটের আবাদ ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। কিন্তু দাম নিয়ে রয়েছে কিছুটা সংশয়। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, সময় মতো পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে কৃষকরা। কোথাও কোথাও পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর কাজও চলছে। এবার ঠাকুরগাঁও জেলায় পাটের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৯১০ হেক্টর আর উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আঁকচা ইউনিয়নের কৃষক মজিবর আলী আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, ৫ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের তুলনায় ভালো দাম পাওয়া নিয়ে চিন্তায় আছি। ঠাকুরগাঁও খোঁচাবাড়ি এলাকার পাটচাষী নজরুল ইসলাম বলেন, পাটের বর্তমান বাজারে কৃষকের লাভ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০ মণ পাট উৎপাদন হয়েছে। আর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। সদর উপজেলার বেগুন বাড়ি এলাকার কৃষক সামাদ আলী জানান, মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে ছিলাম ছিলাম তবে পরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ভালো হয়েছে। এবার আমি ৬ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। বাজারে পাটের দাম নিয়ে সংশয়ে আছি। যদি সরকার পাটের ভাল মূল্য নির্ধারণ করে তাহলে আর্থিকভাবে কিছু লাভবান হবো। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী খান জানান, এবার গত বছরের তুলনায় জেলায় পাটের আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। এলাকার কৃষকরা যাতে পাট যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদন করতে পারে এজন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের কাছে গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। তিনি আরো জানান, বিভিন্ন রোগবালাই থেকে পাটকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছি। পাটের ন্যায্য দাম পেলে চাষীদের মধ্যে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে। তিনি বলেন, এ জেলায় যদি পাট ভিত্তিক কোনো শিল্প কারখানা গড়ে উঠতো তাহলে কৃষকরা আরো ভাল দাম পেত।