Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৫ আগস্ট ২০১৬: ইসলাম শাহীন: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক মোশাররফ হোসেন মুজা। হতদরিদ্র এ শ্রমিকের ৪ মেয়ে ১ ছেলের মধ্যে খাদিজা ২য়। কিশোরী বয়স না পেরুতেই খাদিজা পা দেয় একই গ্রামের নায়েব আলী মন্ডলের ছেলে লম্পট শালিকের পাতা ফাঁদে। শাকিলের নানা প্রলোভনে খাদিজা তার প্রেমে জড়িয়ে পরে। খাদিজার সাথে শাকিলের সম্পর্ক চাচা বাতিজি হলেও বিয়ের প্রলোভনে এক পর্যায়ে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। কিশোরি খাদিজা হয়ে পড়ে অন্তস্বত্তা।
পর্যায়ক্রমে বিষয়টি জানাজানি হলে নিরুপায়ে খাদিজা বিষয়টি তার বাবা মাকে অবহিত করে এবং স্থানীয় মাতাব্বরগণ মিমাংসায় ব্যর্থ হয়। ভুমিষ্ট হয় পাপিয়া নামক এক কন্যা সন্তান। স্থানিয় চেয়ারম্যানের সেচ্ছাচারিতার কারণে নবাগত এ শিশু পৃত্রি পরিচয় পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে খাদিজার পরিবারের দাবি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এলাকাবাসী অন্তস্বত্তা খাদিজা তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শাকিলকে বার বার বিয়ের প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাক্ষান করে এবং খাদিজার গর্ভে সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এঘটনা এলাকায় জানা জানি হলে সমাজচুত হতে হবে এভয়ে খাদিজার বাবা তার বংশের লোকজন নিয়ে গোপনে মিমাংসার চেষ্টা করে। কিন্তু শাকিল ও তার বাবা ঘটনা অস্বীকারে উল্টো খাদিজার পরিবারকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে।

এ বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্তিতিতে কয়েক দফা শালিসি বৈঠক হয়। শালিসে শাকিল খাদিজার সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার করে। শাকিলের জবানবন্দির উপর ভিত্তি করে শালিসদারগণ খাদিজাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মার্জাদানের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে নারাজ শাকিলের পরিবার। তারা খাদিজার পরিবারকে অবৈধ গর্ভের মূল্য দিতে চায় ৭০ হাজার টাকা। বাদী বিবাদীর দ্বিমূখী আচরণে শালিস পন্ড হয়ে যায়। ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয় হতদরিদ্র খাদিজার পরিবার। দিন, সপ্তাহ, মাস পেরিয়ে খাদিজার সন্তান ভুমিষ্টের সময় ঘনিয়ে আসে। গত ২৪ ফেব্রয়ারী ২০১৬ তারিখে ভূঞাপুর শহরে এক বাড়ীতে এক নার্সের তত্তাবধানে খাদিজা প্রসব করে এক কন্যা সন্তান। অনাগত এ নবজাতকের নাম রাখা হয় পাপিয়া।

শাকিল খাদিজার ভালবাসার ফসল নবজাতক পাপিয়াকে নিয়ে তার মা ধারে ধারে ঘুড়ছে পিতৃী পরিচয়ের জন্য। এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বারসহ গণ্যমান্য মাতাব্বরদের নিকট খাদিজার আকুতি পাপিয়া যেন পিতৃী পরিচয় বড় হতে পারে। তার এ আকুতিতে সারা দিয়ে গাবসারা ইউনিয়ন পরিষদের চেরাম্যান মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে গত ২ মার্চ আবারো শালিস হয়। শাকিলের স্বীকার উক্তিমতে শালিসে সিদ্ধান্ত হয় ৫ লক্ষ টাকার কাবিন দিয়ে শাকিল খাদিজাকে বিয়ে করবে। কিন্তু পরদিন স্থানীয় চেয়ারম্যানের ইন্দোনে মোবাইল ফোনে শাকিলের বাবা খাদিজার বাবাকে সাফ জানিয়ে দেয় শালিসের সিন্ধান্ত মেনে নেওয়া হবে না। নিরুপায়ে খাদিজার বাবা গত ৯মার্চ টাঙ্গাইল সহকারী জজ আদালতে নারি ও শিশু নির্যাত আইনে মামলা দায়ের করে।

এদিকে মামলার বাদী খাদিজার বাবা মুজা জানান, শাকিলের বাবা স্থানীয় চেয়ারম্যান তার বাহামভুক্ত মাতাব্বরদের সম্মনয়ে সিদ্ধান্ত নেয় শাকিল খাদিজার সাথে অবৈধ মেলামেশার আপরাধে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করবে। খাদিজার গর্ভের সন্তান পাপিয়ার কোন দায়ভার নিবে না শাকিল। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে ভিবিন্ন ভাবে খাদিজার বাবাকে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেছে। চেয়ারম্যানের সেচ্ছাচারিতার কারণে পিতৃী পরিচয় পাচ্ছে না পাপিয়া এমন অভিযোগ এলাকার ভিবিন্ন মহলের।

এবিষয়ে স্থানিয় মেম্বার মো: ওয়াহেদ আলী জানান, উভয়ের মানসম্মান রক্ষার্থে বিষয়টি আমরা স্থানীয় ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু শাকিলের পক্ষে অপশক্তি কাজ করছে। যার ফলে আমরা মিমাংসা দিতে পারি নাই।

গাবসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান তার সেচ্ছাচারিতার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি যতদুর বিষয়টি এখনো মিমাংসা হয়নি। মামলা চলছে।

ভূঞাপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, শাকিল পলাতক রয়েছে। তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি আছে। তাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।