খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট ২০১৬: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোরের সাবেক এমপি মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে আগামীকাল বুধবার রায় ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার সকালে চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৪ জুলাই প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে ট্রাইব্যুনাল এ মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন।
আট আসামির মধ্যে মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন ও মো. বিল্লাল হোসেন বিশ্বাস গ্রেফতারের পর থেকে কারাগারে।
মো. ইব্রাহিম হোসাইন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, এম এ আজিজ সরদার, আব্দুল আজিজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম ও মো. আব্দুল খালেক পলাতক।
আর এ মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামি মো. লুৎফর মোড়ল কারাবন্দি থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে মারা যান।
এই মামলায় আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ-আল মালুম।
২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর মাওলানা সাখাওয়াতসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। তাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
এ মামলার প্রধান আসামি যশোরের কেশবপুর আসনের সাবেক এমপি সাখাওয়াত হোসেনকে ওইবছরের ২৯ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে যশোরে একাধিক মামলা করা হয়। পরে ওইসব মামলা ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
২০১২ সালের ১ এপ্রিল সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করার জন্য নথিভুক্ত হয়। ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়।
সাখাওয়াত ১৯৯১ সালে যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে জামায়াতের পক্ষে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায়ই তিনি জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির পক্ষে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত।
২০০১ সালের সপ্তম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাখাওয়াত। এরপর বিএনপি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পরে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
পাঁচ অভিযোগ
অভিযোগ ১: যশোরের কেশবপুর উপজেলার বোগা গ্রামে এক নারীকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ধর্ষণ।
অভিযোগ ২: একই উপজেলার চিংড়া গ্রামের চাঁদতুল্য গাজী ও তার ছেলে আতিয়ারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও হত্যা।
অভিযোগ ৩: কেশবপুরের চিংড়া গ্রামের মো. নুরুদ্দিন মোড়লকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন।
অভিযোগ ৪: কেশবপুরের হিজলডাঙার আ. মালেক সরদারকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও খুন।
অভিযোগ ৫: কেশবপুরের মহাদেবপুর গ্রামের মিরন শেখকে অপহরণ, আটক, নির্যাতন এবং ওই গ্রামে অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠন।