খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৯ আগস্ট ২০১৬: কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী সীমা আক্তার (২৩) নামে এক তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। “তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়” এই মর্মে একটি চিরকুট লিখেই আত্মহত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের দাবী। গত ( ৮ আগস্ট) সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় মাধবদীর বিরামপুর (দড়িপাড়া) মহল্লার আমিনুল ইসলামের বাড়ি থেকে পুলিশ ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। এসময় লাশের পাশ থেকে তার লিখা চিরকুটটিও উদ্ধার করা হয়।
জানাযায়, নরসিংদীর কারারচর এলাকার মৃত মন্টু মিয়ার স্ত্রী পরিবার নিয়ে বিরামপুরের ঐ বাড়িটিতে ভাড়া থাকতেন। তার ছেলে মাধবদীর একটি ফ্যাক্টরীতে কাজ করতো। অভাবের সংসারে ভরন-পোষনের জন্য তিনিও মানুষের বাড়িতে ঝি এর কাজ করতেন। তবু তিনি মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ বানাতে চেয়েছিলেন। তাই ভর্তি করে দিয়েছিলেন মাধবদী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। কিন্তু তার সে আশা পূর্ণ হলোনা। ঘটনার রাতে তিনি কাজ শেষে ফিরে এসে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় মেয়ের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। মেয়ের কথা বলে বিলাপ করে বারবার তিনি মূর্ছা যাচ্ছিলেন। পাশেই ভাই ও মামাকে উদ্দেশ্য করে চিরকুটে লেখা“ আমার মায়ের খুব কষ্ট, তাকে দেখার মতো কেউ নেই, তোমরা তাকে দেখে রেখো আর আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না”। এ ঘটনায় বাড়িতে আসা লোকজনও আপ্লুত হয়ে পড়েন।
ঘটনার পরপর মাধবদী থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী মর্গে প্রেরণ করে। এসময় লাশের সাথে সুইসাইড নোটটিও উদ্ধার করা হয়।
এদিকে তার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। তারা এ আত্মহত্যার সাথে প্রেমঘটিত কোন ঘটনা জড়িত থাকতে পারে বলে জানান। নিহতের এক প্রতিবেশী জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে সীমা রিক্সাযোগে কোন জায়গা থেকে আসে। এসময় তাকে খুব চিন্তিত লাগছিল। সে তাকে নিয়ে আসা রিক্সার ভাড়া পরিশোধ না করেই ঘরে চলে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে ডাকাডাকি না করেও তার কোন সাড়া না পেয়ে তার মাকে খবর দেয়া হয়। এলাকাবাসির ধারণা সঠিক তদন্ত হলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, সুইসাইড নোট থেকে এটি সাধারণ আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবু এর সাথে অন্যকোন ঘটনা রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।