খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ আগস্ট ২০১৬: আত্মহত্যা করতে কেউই চান না। কিন্তু পরিস্থিতি এক সময় মানুষকে এমন একটি অবস্থায় নিয়ে যায় যখন সে আত্মহত্যাকেই বেঁচে যাওয়ার একমাত্র উপায় বলে মনে করে। সে অর্থে একে আপনি ‘মরে গিয়ে ভালো থাকা’ বলতে পারেন। কিন্তু কাজটি সঠিক তো নয়ই, সহজও নয়।
আত্মহত্যা কেউ করতে চাইলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন বিভিন্নভাবে। পরিবার, পরিচিতজন, এমনকি আমাদের সমাজও এটি কখনও সমর্থন করবে না। ফলে আপনি কোথাও এ কাজে সহযোগিতা পাবেন না। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের আইন বলছে ভিন্ন কথা। সে দেশে নিশ্চিন্তে আত্মহত্যার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট ক্লিনিক! এর অন্য নাম ‘মৃত্যু ঘর’। কি অবাক হচ্ছেন? তাহলে জেনে রাখুন সে দেশে ইচ্ছেমৃত্যু বৈধ। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি যদি আত্মহননের পথ বেছে নিতে চান তবে তাকে এ কাজের জন্য সহায়তা করা হয়।
আত্মহত্যায় সাহায্য করতেই ১৯৯৮ সালে জুরিখে শুরু হয় ক্লিনিকটির পথচলা। তবে চাইলেই যে কেউ আত্মহত্যা করতে পারবেন এমন নয়। সেখানে আগে রোগীকে প্রমাণ করতে হবে যে, তিনি আত্মহত্যার জন্য প্রস্তুত এবং এর যুক্তিসঙ্গত অনেক কারণ রয়েছে। আপনি অনেক বিবেচনা করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমনকি মৃত্যুর জন্য চেতনানাশক প্রাণঘাতী যে ওষুধ সেটিও নিজেকেই খেতে হবে।
১৯৯৮ সালে ওই ক্লিনিক খোলার পর এখনো পর্যন্ত ২৭৩ ব্রিটিশ নাগরিক সেখানে আত্মহত্যা করেছেন। তবে ব্রিটেনের আগে রয়েছে জার্মান। ৯২০ জার্মান নাগরিক সেখানে আত্মহত্যা করেছেন। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। ১৯৪ জন সেখানে গিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এক ব্রিটিশ নাগরিকের আত্মহত্যার পর সম্প্রতি ওই ক্লিনিকের নাম আলোচিত হয়। কয়েকদিন আগে সেখানে গিয়ে আত্মহত্যা করেন ব্রিটিশ নাগরিক জেফরি স্পেক্টর। ৫৪ বছরের ওই ব্যক্তি দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছিলেন। তবে তার স্ত্রী এবং তিন মেয়ে তাকে এ কাজে নিষেধ করেন। নিষেধ অমান্য করেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। নিজের আত্মহত্যার স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে জেফরি বলেন, ‘স্ত্রী ও সন্তানদের ভালোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
আর ওই ‘মৃত্যু ঘরে’ যাওয়ার আগে পরিবারের সবার সঙ্গে শেষ খাবার খান জেফরি। অনেকটা সময়ও কাটান তিনি।