খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ আগস্ট ২০১৬: নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় পুলিশের প্রতিবেদন গ্রহণ না করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে এই ঘটনার তদন্ত করে ১৩ নভেম্বর হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাশের যুগ্ম হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদেশে আদালত বলেছেন, পুলিশ এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের তদন্তের প্রতিবেদন গ্রহণ করে নথিভুক্ত করার যে আদেশ দিয়েছে এতে আমরা মনে করি ঐ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারিক মনন (জুডিশিয়াল মাইন্ড) প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
গত ১৩ মে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে ঘটনার প্রেক্ষিতে কী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানাতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
এরপর পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে বলা হয় শিক্ষককে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় পুলিশ জিডি করে। পরে জিডির তদন্তের অগ্রগতি জানিয়ে প্রতিবেদন দিতে পুলিশ সুপার ও বন্দর থানার ওসিকে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আদেশ মোতাবেক নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার ও বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে বলা হয়েছে, উত্তেজিত জনতার দাবির প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠ-বস করানোর ঘটনাটি আকস্মিকভাবে ঘটেছে।শ্যামল কান্তি ভক্ত ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান দুইজনই উদ্ভূত পরিস্থিতির শিকার। এতে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় শ্যামল কান্তি ভক্ত কাউকে দোষী করছেন না। এমন কি আদালত বা পুলিশের কাছে অভিযোগ করবেন না বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। ফলে এ ঘটনায় কারোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যায়নি।
পুলিশের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার ঘটনার তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন আদালত।