খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১০ আগস্ট ২০১৬: ত্যুদণ্ড প্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধী সাখাওয়াত হোসেন বহুদল করলেও তিনি এখন কারো নন। মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর তার করা দলগুলোর কেউই কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চাইছে না।
ঘুরে ফিরে অন্তত সাতটি দল করেছেন সাখাওয়াত হোসেন। জামায়াতের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন। যশোরের মনিরামপুর-কেশবপুর আসন থেকে সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন। পরে নিজ দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিরোধে দল ছেড়ে যোগ দেন বিএনপিতে। এই দলের হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশও নেন তিনি। পরে আবার বিএনপি ছাড়েন, নানা দল ঘুরে যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে।
জাতীয় পার্টিতেও বেশিদিন থাকেননি সাখাওয়াত। একে একে সাবেক বিএনপি নেতা অলি আহমেদের এলডিপি, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কিংস পার্টি হিসেবে পরিচিত ফেরদৌস আহমেদ কোরেশীর প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি-পিডিপি, চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন ঘুরে আবার এরশাদের জাতীয় পার্টিতে ঠাঁই হয় সাখাওয়াত হোসেনের। দলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের পদও পেয়েছিলেন তিনি।
১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মনিরামপুর-কেশবপুর আসনে সাখাওয়াতকে মনোনয়ন দেয় জামায়াত। জেতার পর জামায়াতের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয় তার। ১৯৯৬ সালে তিনি ওই আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন বিএনপির হয়ে। কিন্তু আর জিততে পারেননি।
নেতাদের সঙ্গে বিরোধের জেরে দল ছাড়ার পর এই নেতাই আবার ‘শত্রু’ হয়ে যায় জামায়াতের। এর আগে ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী নেতাদের ফাঁসির রায় হলেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াত। তবে দলের সাবেক সংসদ সদস্যের ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর কোনো প্রতিক্রিয়াই নেই দলটির। ন্যূনতম একটি বিবৃতি দেয়নি দলটি।
সাখাওয়াতের আরেক সাবেক দল চরমোনাইয়ের পীরের দল কী ভাবছে, জানতে চাইলে এক নেতা এড়িয়ে যান প্রসঙ্গটি। তিনি বলেন, ‘তিনি তো জামায়াত থেকে বিএনপি হয়ে আমাদের কাছে এসেছিলেন। কিন্তু আমাদের ওপরও সন্তুষ্ট ছিলেন না’।
সাখাওয়াতের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে তার বর্তমান দল জাতীয় পার্টিরও কোন প্রতিক্রিয়া নেই। দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘আদালতের রায়ের বিষয়ে আমি কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না। উনি এর আগেও বিভিন্ন দল করেছেন। এখন আমাদের দলে এসেছেন, পরে আবার আমাদের দল ছেড়ে অন্য দলে গেছেন, পরে আবার ফিরে এসেছেন। এটা আমাদের দেশের রাজনীতিতে হয়েই থাকে।