খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০১৬ : সবাই এখন একটা কথা খুব ভালভাবেই জানেন, ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন।’ কিন্তু ব্যাপারটা তো আসলে কেবল হার–জিতের নয়।
রাগের মাথায় আমরা অনেক কথাই বলে ফেলি যা কখনো কাম্য নয়, অনেক কিছুই করে ফেলি, যা নিজেদেরই বিপদে ফেলে। মুশকিলটা এখানেই। রাগান্বিত অবস্থায় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক না।
তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ করে মাথা ঠান্ডা রাখাটা জরুরি। বাড়িতেই হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রে বা বন্ধুদের
আড্ডায়, হঠাৎ রাগ হতেই পারে। আকস্মিক রাগ নিয়ন্ত্রণে নিচের বিষয়গুলো চর্চা করে দেখতে পারেন।
ঠোঁট বন্ধ রাখুন
রাগ উঠে গেলে বা কেউ খোঁচাতে থাকলে মুখ বন্ধ করে রাখাটা কঠিন বটে। কিন্তু এ সময় ঠোঁটে তালা মেরে রাখতে পারাটা দারুণ কার্যকর। অপরপক্ষকে মনের ঝাল মেটাতে দিন কিন্তু আপনি টুঁ শব্দটিও করবেন না। এর মধ্য দিয়ে অপরপক্ষের মনের কথাগুলো আপনি জেনে গেলেন। ধৈর্য ধরে রাখতে পারলে পরে বিষয়গুলো নিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন। এই চর্চা আপনাকে শক্তিমান করবে।
গভীরভাবে শ্বাস নিন
যদি বুঝতে পারেন যে আপনার রাগ হচ্ছে, তাহলে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন। গভীর দম নিয়ে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনতে থাকুন। আস্তে আস্তে দম ছাড়ুন। এতে কিছুক্ষণের জন্য হলেও মন অন্যদিকে যাবে। আর গভীর শ্বাস তাৎক্ষণিকভাবে আপনার মাথায় অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়াবে, মাথায় রক্ত চলাচল হবে। ফলে আপনি একটু চাঙা বোধ করবেন। ঠান্ডা মাথায় বিষয়গুলো ভাবার সময় পাবেন।
চোখ বন্ধ, কানও বন্ধ
রাগের মাত্রা আরও বেড়ে গেলে শুধু ঠোঁট নয়, চোখ আর কানও বন্ধ করে ফেলতে হবে। এই পরামর্শে মেজাজ খারাপ হতে পারে বটে, কিন্তু এটা সত্যিই কার্যকর। যে আপনাকে রাগিয়ে দিচ্ছে বা যা নিয়ে আপনি রেগে যাচ্ছেন, কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে সেখান থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে ফেলুন। যেন আপনি সেখানে থেকেও নেই। তবে আপনার অভিব্যক্তিতে এমন কিছুই আনবেন না, যা আপনার প্রতিপক্ষকে আপনার মনের ভাব বুঝতে দেয়। আপনি কেবল সাময়িকভাবে দেখাশোনা বন্ধ করে দিন।
একটু হেঁটে আসুন
ঘটনার শুরু যেভাবেই হোক না কেন, রাগারাগিতে কোনো পক্ষেরই লাভ হয় না। রাগ সামলাতে না পারলে অল্প সময়ের জন্য হলেও ঘটনাস্থল ত্যাগ করুন। একটু হেঁটে আসুন। এতে রাগারাগি আর না বাড়ার সুযোগ তৈরি হবে আর আপনার মনও হয়তো একটু শান্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।
ধ্যান করুন
নিয়মিত একটু সময়ের জন্য মেডিটেশন বা ধ্যান করার চর্চা করুন। এটা আপনার চরিত্রে স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। ধ্যানচর্চায় অভ্যস্ত হলে আপনি কাউকে কিচ্ছু বুঝতে না দিয়েই যেকোনো সময় নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আকস্মিকভাবে রেগে যাওয়ার রোগ থাকলে সেটাও সেরে যেতে পারে নিয়মিত ধ্যানে।