Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৩ আগস্ট ২০১৬: সুইসাইড (আত্মঘাতী) স্কোয়াড বানানোর মতো পর্যাপ্ত সদস্য না থাকায় বাইরে থেকে নয়জনকে ঢাকায় আনে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, গুলশান ও কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অনেক জঙ্গি মারা যায়। ফলে ঢাকায় জঙ্গি হামলা করার মতো জেএমবির সদস্য ঘাটতি দেখা দেয়। ঘাটতি মেটাতে ঢাকার বাইরে থেকে নয় সদস্যকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে কল্যাণপুর থেকে গতকাল রাতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর অন্য চারজন পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—আতিকুর রহমান ওরফে আইটি আতিক, আবদুল করিম বুলবুল ওরফে ডা. বুলবুল, আবুল কালাম আজাদ, মতিউর রহমান ও শাহীনুর রহমান ওরফে তারেক। এ ছাড়া পলাতক চার জঙ্গি হলেন—নান্নু, সজীব, ইমরান ও জিন্সি (সাংগঠনিক নাম)।
সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশান ও কল্যাণপুরের জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের তদন্ত কর্মকর্তারা জানতে পারেন, উত্তরবঙ্গ থেকে কয়েকজন ‘নিও জেএমবি’ সদস্যকে ঢাকায় আনা হচ্ছে। কারণ, তাঁদের ঢাকাকেন্দ্রিক হামলাকারীর সংখ্যা একেবারেই নেই বললেই চলে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা গেলেও চারজন পালিয়ে যায়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৮৫টি ডেটোনেটর (বিস্ফোরক) ও ৮৭৫ গ্রাম জেল উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার জানান, ওই পাঁচজন মূলত বোমা তৈরি করত। কর্মী সংকট দেখা দেওয়ায় তাঁদের ঢাকায় আনা হয়েছে। এর আগে তাঁদের সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সুইসাইড স্কোয়াডের সদস্য বানাতে এবং ঢাকায় বড় ধরনের কোনো নাশকতা চালানোর জন্যই তাঁদের আরো বেশি প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই এ নয়জন বাড়ি থেকে বেরিয়েছে। এই কয়েক মাসে তাঁরা পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেনি। এ ব্যাপারে আরো বেশি খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
গুলশান হামলার ব্যাপারে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে এরই মধ্যে নানা রকম তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে বলে জানান মনিরুল। তিনি বলেন, কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানার ব্যাপারেও নানা তথ্য পাওয়া গেছে। আরো বেশি জানতে পাঁচ জঙ্গিকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।
নিও জেএমবি বলতে কী বোঝায়—জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলা ভাই মারা যাওয়ার পর মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির নেতৃত্ব দেন। তিনিও পুলিশের কাছে ধরা পড়ে জেলে যাওয়ায় অনেকেই নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েন। তাঁর অনুপস্থিতিতে অনেকেই নতুন করে জেএমবি পরিচালনা করে থাকেন। এই নতুন গ্রুপকেই নিও জেএমবি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মনিরুল বলেন, অনেকেই মাওলানা সাইদুর রহমানের নেতৃত্ব মানেন না। এমন সদস্যরাও নিও জেএমবির হয়ে কাজ করেন।